Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
library

তালাবন্ধ পড়ে রয়েছে হাজারো বই ভরা গ্রন্থালয়

রয়েছে হাজার হাজার বইয়ে ভরা গ্রন্থাগার। তারা রয়েছে ঘরবন্দি হয়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৬:৩৯
Share: Save:

ছাত্র ছাত্রীদের লম্বা ছুটি। শিক্ষকরাও কম আসছেন স্কুলে। কিন্তু বিদ্যালয় তো দাঁড়িয়ে রয়েছে ভবনকে বুকে নিয়ে। সেই ভবনে রয়েছে হাজার হাজার বইয়ে ভরা গ্রন্থাগার। তারা রয়েছে ঘরবন্দি হয়ে। সঙ্গে রয়েছে মিড ডে মিলের চাল ও অনান্য দ্রব্য। সেগুলো কি অবস্থায় রয়েছে। সেই নিয়ে চিন্তার শেষ নেই ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবকদের।

গত ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে স্কুল বন্ধ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনি পর্যন্ত কিছু দিন স্কুল হয়েছিল। তারপর সেটা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গত প্রায় দেড় বছর স্কুল বন্ধ, থেমে রয়েছে নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস। রাজ্যে সবে মাত্র শেষ হয়েছে ইয়াসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। দমকা ঝড়, টানা মুষলধারে বৃষ্টি। তার পর চলছে বৃষ্টি সঙ্গে, বজ্রপাত, দমকা বাতাসও চলছে। গ্রাম ও শহরে গাছ পড়ে গিয়ে নানা বিপত্তি হচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারি ও সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুল গুলোর গ্রন্থাগারের কি অবস্থা। সেটা খোঁজ নিতে গিয়ে কি তথ্য উঠে এল?

বেলডাঙা দেবকুণ্ড এসএআরএম গার্লস হাই মাদ্রাসার বেলডাঙার প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থান।

একটা মস্ত বড় পুকুরের পাশে অবস্থান। সামনে ফাঁকা মাঠ সেই মাঠ পার করে স্কুলে প্রবেশ করতে হয়। স্কুল বন্ধ থাকা কালীন স্কুলের মিড ডে মিলের চাল ও গ্রন্থাগারের পুস্তক নিয়ে সমস্যায় রয়েছে স্কুল। মিড ডে মিলের চাল এক বস্তায় থাকে পঞ্চাশ কেজি। সেই বস্তা রাখার পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় সমস্যা হয়েছে। বৃষ্টিতে চালের বস্তা এক সময় ভিজেছে। পরে স্কুলের পক্ষে চালের বস্তা রাখার জন্য স্থান তৈরি করা হয়। সমস্যা গ্রন্থাগারের বই রাখারও। কারণ ঝড় বৃষ্টিতে জানালা ও দরজার পাল্লা খুলে গিয়ে বিপত্তি। স্কুলে কেউ আসতে পারেন না। ফলে নজরদারিও হয় না। তার জেরে দিনের পর দিন সেই খোলা পাল্লা দিয়ে জল ঢুকে সমস্যা হয়।

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, “আমাদের স্কুলে গ্রন্থাগার রয়েছে। আমরা সেই বই খুব যত্নে রাখি। কিন্তু ঝড় বৃষ্টি হলে সমস্যা। কারণ স্কুলে জানালা বা দরজা ঝড়ের দাপটে খুলে গেলে সেই দিক দিয়ে জল প্রবেশ করে বিপত্তি ঘটাতে পারে।” তিনি বলেন, “মাদ্রাসা বন্ধ। মিড ডে মিল ছাড়া স্কুল খোলার কোন নির্দেশিকা নেই। ফলে গ্রন্থাগার নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।”

শক্তিপুর কেএমসি ইনস্টিটিউশনের প্রবীন শিক্ষক প্রদীপ নারায়ণ রায় বলেন, “আমাদের গ্রন্থাগার আছে কিন্তু সেই বই সুরক্ষিত থাকে। আমাদের দোতলার ঘরের দরজা ও জানালা মেটাল সিটের। ফলে ঝড় বা বৃষ্টিতে সমস্যা হয় না। তা ছাড়া স্কুলের যিনি গ্রন্থাগারিক তিনি স্কুলের পাশেই থাকেন। ফলে কোনও সমস্যা হলে তিনি দ্রুত সমস্যার সমাধান করেন।”

বেলডাঙা হরিমতি গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নবনিতা সরকার বলেন, “আমাদের যে ঘরে গ্রন্থাগার সেই ঘরে ঝড় জলে সমস্যা তেমন নেই। কিন্তু বই রাখার ভাল আলমারি নেই। সেটা থাকলে বই আরও ভাল থাকতো।”

বেলডাঙা ভাবতা আজিজিয়া হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক বলেন, “আমাদের গ্রন্থাগারে প্রায় ৬০০০ বই রয়েছে। সেগুলো আমরা নিজেদের উদ্যোগে পুরো ব্যবস্থা করে ভাল ভাবেই রেখেছি।” বেলডাঙা নওপুকুরিয়া নতুন পাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুখময় সাহা বলেন, “আমাদের স্কুলের তৈরি গ্রন্থাগারে প্রায় ১০০০ বই রয়েছে। সেগুলো আমরা খুব কষ্টে সুরক্ষিত রেখেছি।”

বেলডাঙা হরেকনগর কে এম ইন্সটিটিউটের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সেলিম বলেন, “আমাদের গ্রন্থাগারে প্রায় ৩২০০ বই রয়েছে। সেগুলো সুরক্ষিত রয়েছে। তবে তার সঙ্গে আমরা ই লাইব্রেরী তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। সেটার কাজ চলছে। সেটার সম্পূর্ণ হয়ে গেলে অনেক সমস্যা কমবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

library COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE