Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাছ-মাংস আড়ালেই কাটা হোক

খনও বাবার সঙ্গে বাজার গেলে মুরগির দোকানে যাই না। আমি দূরে কোথাও দাঁড়িয়ে থাকি। ধারালো বড় বঁটির সামনে মুরগিগুলোর দিকে তাকালে মনখারাপ করে। কাটার পরে মুরগিগুলো যে ভাবে ছটফট করতে করতে মারা যায়, তা দেখে আসার পরে আমি অনেক দিন মুরগির মাংস খেতে পারিনি।

ঋষিকা জায়সবাল ও অস্মি মণ্ডল
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

বহরমপুর ইন্দ্রপ্রস্থ থেকে প্রতি দিন স্কুল যাতায়াতের পথে পড়ে রানিবাগান মোড়। প্রতিদিন সকালে স্কুল যাওয়ার সময়ে আমি পুলকারের ডান দিকে জানলার পাশের সিটে বসি না। কারণ, যাওয়ার সময়ে রানিবাগান মোড়ের ডান দিকে কয়েকটি দোকানে খাসির মাংস কেটে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ওই দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারি না। কান্না পায়।

একই কারণে আমি মুরগি কাটাও দেখতে পারি না। কখনও বাবার সঙ্গে বাজার গেলে মুরগির দোকানে যাই না। আমি দূরে কোথাও দাঁড়িয়ে থাকি। ধারালো বড় বঁটির সামনে মুরগিগুলোর দিকে তাকালে মনখারাপ করে। কাটার পরে মুরগিগুলো যে ভাবে ছটফট করতে করতে মারা যায়, তা দেখে আসার পরে আমি অনেক দিন মুরগির মাংস খেতে পারিনি।

তার পর থেকে বাবা-মা আমাকে আর বাজারে নিয়ে যায় না। আমার এক বন্ধু তো মাছের বাজারে গিয়ে মাছ কাটা দেখে কেঁদে ফেলেছিল। কেউ কি ওই কাকুদের নিষেধ করতে পারে না? আমরা বন্ধুরা মিলে ঠিক করেছি, বড় হয়ে এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করব। যাতে প্রকাশ্যে‌ মাছ-মাংস কাটা বন্ধ হয়।

কৃষ্ণনগরে চোখের সামনেই মুরগির গলাটা কেটে ফেলল। কী রক্ত রে বাবা! সহ্য করা যায় না। দিদার সঙ্গে বাজারে গিয়েছিলাম মাংস কিনতে। খুব কষ্ট হচ্ছিল। আগে মাঝে মধ্যেই বাবার সঙ্গে বাজারে যেতাম। আনাজ কিনে মাছের বাজারে গিয়ে মাছও কিনতাম। এখন আর যাই না। গামলার ভিতরে রাখা জ্যান্ত মাছগুলোকে চোখের সামনে যে ভাবে কাটে তা দেখতে ভারী কষ্ট হয়।

আমিনবাজারে মাছের বাজারেরই একটা দিকেই মুরগির মাংস বিক্রি হয়। লোহার জালের ভিতরে রাখা থাকে সাদা মুরগিগুলো। চুপটি করে বসে থাকে। জানতেও পারে না, ওদের এখনই কেটে ফেলা হবে। আমার এক বন্ধু সৃজা পাল। সেও একবার মায়ের সঙ্গে বাজারে গিয়ে মুরগি কাটা দেখেছে। সহ্য করতে পারেনি। কেঁদে ফেলেছিল। স্কুলে এসে আমাকে বলেছিল, ‘‘মাংস কাটা দেখতে খুব কষ্ট হয়, জানিস। ও ভাবে মাংস কাটা বন্ধ করা যায় না?” আমার, সৃজার মতো অনেকেরই কষ্ট হয়। বড়রা কেন যে সেটা বোঝে না, কে জানে।

আমি তো আর পাত্রবাজারেও যাই না। ওখানে ঢোকার মুখেই ছাগলগুলো কেটে টাঙিয়ে রাখে। চারদিকে রক্ত। রাস্তার উপরে রক্ত এসে পড়ে। রক্তের গন্ধ আমার একদম সহ্য হয় না। গা গুলিয়ে ওঠে। এক দিন তো আমার চোখের সামনেই একটা ছাগল কাটল। আমি চোখ সরিয়ে নিয়েছিলাম। যারা প্রতিদিন বাজরে যায় তারা কেন কিছু বলে না?

ঋষিকা বহরমপুর ডন বস্কো স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ও অস্মি কৃষ্ণনগর হোলি ফ্যামিলি গার্লস প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fish Chicken Mutton Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE