মাথার উপরে মাঝদুপুরের গনগনে রোদ। সেই রোদ মাথায় নিয়েই বুধবার কৃষ্ণনগরের মাঠে শেষলগ্নের প্রচার সারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার আসার কথা ছিল দুপুর ২টোয়। কিন্তু হঠাৎই জল্পনা শুরু হয়, তিনি দেরি করে আসবেন। রোদের হলকায় তখন মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন। সম্ভবত সেই কারণে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠ পুরো ভরেওনি। তবে সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে যখন হেলিকপ্টার এসে নামল, ঘড়িতে তখন দুপুর প্রায় ২টো ২০। মঞ্চে হাজির কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের প্রার্থী মহুয়া মৈত্র এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। সম্ভবত সভার মাঠ অনেকটা ফাঁকা দেখেই প্রচণ্ড রোদের মধ্যে সভা করার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন মমতা। সেই সঙ্গে আগের দিনের মতো সভায় আসা মহিলাদের মঞ্চের সামনে সংবাদমাধ্যমের জন্য রাখা ফাঁকা জায়গার এক পাশে ঢুকিয়ে নেন।
মমতা এ দিন এক দিকে যেমন রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান পেশ করেছেন, সেই সঙ্গেই তোপ দেগেছেন জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং উগ্র হিন্দুত্ব নিয়েও। নদিয়া জেলায় কী কী উন্নয়ন হয়েছে, তারও খতিয়ান তিনি তুলে ধরেন। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বলতে দিয়ে চিকিৎসকের অভাবের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “প্রয়োজন ১০ হাজার ডাক্তার। পেয়েছি আড়াই হাজার। আগে শুধু বাংলার ছেলেমেয়েরাই পড়তে পারত। এখন নিয়ম, অন্য রাজ্যের ছেলমেয়েরা পড়তে পারবে। তারা পাশ করে চলে যাচ্ছে।” ডাক্তারের সংখ্যা বাড়াতে ১৫টি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের ভবিষ্যত অনেকটাই নির্ভর করছে সংখ্যালঘু ভোটের উপরে। কিন্তু মমতা মুসলিমদের পাশাপাশি বলেছেন হিন্দুদের কথাও। বিজেপির রামমন্দির করতে না পারার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন রাজ্যে হিন্দু ধর্মস্থানের জন্য তাঁর সরকার কী কী করেছে। এরই মধ্যে সভার পিছন দিক থেকে কিছু লোক মাঠ ছাড়তে শুরু করেন। তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করেন। তা মমতার চোখ এড়ায়নি। তিনি বলেন, “ওদের যেতে দাও। কাজ আছে। অনেকক্ষণ এসেছে।”
তৃণমূল নেতাদের একটা অংশের দাবি, ভিড় কম বা সভার মাঝেই লোকের মাঠ ছাড়ার কারণ গরম। জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “দিন তিনেক আগে জেলায় চারটি জনসভা ও দু’টি পদযাত্রা করেছেন আমাদের নেত্রী। আমরা তাই কৃষ্ণনগর শহর ও আশপাশের গ্রাম থেকে লোক এনেছি।’’