প্রতীকী ছবি।
বিজেপির আংশিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু সেখানে মুর্শিদাবাদের তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের (জঙ্গিপুর, বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ) কারও নামই ঘোষণা করা হয়নি। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই আসনগুলোতেও খুব শীঘ্র প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
এ দিকে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বহরমপুরে বিজেপির প্রার্থী কে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। বহরমপুরের চার বারের সাংসদ অধীর চৌধুরীর একদা ছায়াসঙ্গী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর? নাকি অধীর চৌধুরীর কৈশোরের উপবন গোরাবাজার আইসিআই-এর অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধানশিক্ষক, তথা ২০০১ সালের ভোটে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির পরাজিত প্রার্থী যাদবেন্দ্র পাণ্ডে?
জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চেয়ে জেলা কমিটি, রাজ্য কমিটি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মোট ১৭ জনের আবেদনপত্র জমা পড়েছে দলের কাছে। এ ছাড়াও রয়েছে সর্বভারতীয় বিজেপির পক্ষ থেকে নিয়োগ করা একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা থেকে উঠে আসা নাম। তা সত্ত্বেও বহরমপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে যাদবেন্দ্র পাণ্ডে ও হুমায়ুন কবীরের নাম দু’টি নিয়েই জল্পনা এখন তুঙ্গে।
সেই জল্পনা উস্কে দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি, তথা এবিভিপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন নেতা যাদবেন্দ্র পাণ্ডে। ছাত্রাবস্থা থেকে এখন পর্যন্ত সঙ্ঘ পরিবারের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত যাদবেন্দ্র পাণ্ডে বলছেন, ‘‘বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী হতে চেয়ে বিজেপির প্রদেশ ও সর্বভারতীয় স্তরে লিখিত আবেদন করেছি। বাকিটা দলের হাতে।’’
তবে নিজেকে নিয়ে প্রায় সব মহলের জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন বর্তমানে বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি (দক্ষিণ)-র সহ-সভাপতি হুমাযুন কবীর। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীন রেজিনগর বিধানসভার একদা বিধায়ক তথা আরও দু’ বারের বিধানসভা ভোটের পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হুমায়ুন কবীর বলছেন, ‘‘আমি মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চেয়ে দলের কাছে আবেদন করেছি। বহরমপুরের জন্য নয়।’’
নিজে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন করলেও দলের একটি অংশের মতে, হুমায়ুন কবীরের জন্য বহরমপুর কেন্দ্রটি বরাদ্দ হওয়ার সম্ভবনাই যথেষ্ট উজ্জ্বল। তাঁদের মতে, ‘‘মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের জন্য ১৪ জন আবেদন করলেও দৌড়ে এগিয়ে আছেন গত বারের পরাজিত প্রার্থী সুজিত ঘোষ ও দলের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শাখারভ সরকার।’’
ওই দু’জনের মধ্যে আবার এগিয়ে আছেন মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন জয়েন্ট ডিরেক্টর সুজিত ঘোষ। জেলা বিজেপির একাংশের মতে, ‘‘সুজিত ঘোষকে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী করতে চাওয়ায় বহরমপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী হিসাবে হুমায়ুন কবীরের নামই প্রবল ভাবেই ভেসে উঠেছে।’’
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ৫০ শতাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটার। সেটা মাথায় রেখেই বহরমপুর কেন্দ্রে হুমায়ুনকেই আপাতত শ্রেয় মনে করছে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে, তৃণমূল থেকে নির্দলে, নির্দল থেকে কংগ্রেস ও কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরকে শতকরা ৭৩ ভাগ সংখ্যালঘু ভোটারের জেলায় লোকসভার প্রার্থী করারও বড় দায় আছে বিজেপির। হুমায়ুন কবীর বলছেন, ‘‘দল যেটা মনে করবে সেটাই শেষ কথা।’’
জঙ্গিপুরে গত লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন পেশায় আইনজীবী সম্রাট ঘোষ। এ বারে প্রার্থী কে হচ্ছেন? বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলছেন, ‘‘আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা না হলেও আমাদের প্রার্থী হচ্ছেন রঞ্জন ভট্টাচার্য।’’ আর বহরমপুরের বাসিন্দা রঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘বিজেপি আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে। আমিও রাজি হয়েছে। এখন কী হয় দেখা যাক!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy