ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের লালগোলার আটারশিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার হল মেক্সিকান মাদক মেসকালাইন। বিএসএফের হাতে উদ্ধার ওই মাদকের পরিমাণ প্রায় ৫০০ গ্রাম। এর বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। এই মাদক পাচারচক্রের সঙ্গে মেক্সিকোর কুখ্যাত অপরাধী সিন্ডিকেট ‘কার্টেল দে জ্যালিস্কো নুয়েভা জেনারেশন’-এর যোগসাজশের ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র।
বিএসএফ সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশেষ একটি সূত্রে তারা খবর পায়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে ‘বিশেষ’ মাদক পাচারের চেষ্টা চলছে। সঙ্গে সঙ্গে আটারশিয়া সীমান্তে নজরদারি বাড়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। গভীর রাতে দেখা যায়, সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতের ভূখণ্ডের দিকে কয়েকটি প্যাকেট ছুড়ে দিচ্ছে কয়েক জন। পাচারকারীদের ধরতে এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশি চালিয়ে ৫টি প্যাকেট উদ্ধার করে তারা। প্রাথমিক পরীক্ষায় জানা যায়, প্যাকেটে থাকা সাদা গুঁড়োর মতো জিনিসটি মেক্সিকোর নিষিদ্ধ মাদক মেসকালাইন। মেক্সিকোর পিওট নামক ক্যাকটাস থেকে এটি তৈরি হয়। মস্তিষ্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এই মাদক। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি গ্রাম মেসকালাইনের দাম ৬০ হাজার টাকারও বেশি। এমন মাদক উদ্ধারের কথা জানতে পেরে তদন্ত শুরু করেছে এনসিবি।
আরও পড়ুন:
এনসিবি সূত্রে খবর, গত কয়েক মাসে দিল্লির গুরুগ্রাম এবং মুম্বইয়ের অভিজাত পার্টিতে ওই মাদক ছিল বেশ কয়েক জনের কাছে। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় মেসকালাইনের অস্তিত্ব উদ্বেগ বাড়িয়েছে তদন্তকারীদের। এনসিবি-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মেসকালাইন সাধারণত আমেরিকা বা ইউরোপের বাজারকে লক্ষ্য করে পাচার করা হয়। ভারতের গ্রামীণ এলাকায় এমন মাদক উদ্ধারের ঘটনা চিন্তার। পাচারচক্র নিয়ে তদন্ত আরও জোরদার হয়েছে।’’ গোয়েন্দারা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা এখন নতুন পথে ভারতের বাজারে মাদক প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মেক্সিকান কার্টেলের সঙ্গে এশিয়ার চোরাচালান চক্রের যোগাযোগ থাকলে তদন্তে তা উঠে আসতে পারে। এর আগে গোয়ায় উদ্ধার হয়েছিল মেথামফেটামিন। কিন্তু মেসকালাইনের মতো ‘দামি’ মাদক সীমান্তে ধরা পড়ায় সতর্ক হয়েছেন গোয়েন্দারা।