Advertisement
০১ মে ২০২৪
Migratory Labourer

বাস ভাড়া করে ভিন রাজ্যে পরিযায়ীরা

প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এই যাতায়াত নিয়ে তাদের কিছুই জানা নেই। তারা গাড়ি ঘোড়া চলার ব্যাপারে কোন অনুমুতিও দেননি।

বাস ভাড়া করে কলকাতার পথে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। সেখান থেকে যাবেন ভিন রাজ্যে।

বাস ভাড়া করে কলকাতার পথে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। সেখান থেকে যাবেন ভিন রাজ্যে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৫:০৪
Share: Save:

লকডাউন চলছে, আর তার মাঝেই চলছে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার হিড়িক। ডোমকল থেকে প্রতিদিন একাধিক গাড়ি পাড়ি দিচ্ছে কেরলের উদ্দেশে। যাত্রী বোঝাই সেই সব গাড়িতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রওনা দিচ্ছেন কাজের খোঁজে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যেও এভাবে যাতায়াত কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের?

তাঁদের দাবি, ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে, ফলে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে। প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে লকডাউনের আগে শ্রমিক নিয়ে আসা শতাধিক বেসরকারি বাস মুর্শিদাবাদে এসে আটকে গিয়েছিল লকডাউন এর ফাঁদে পড়ে। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই তারা এখন ফিরে যাচ্ছে নিজের রাজ্যে। আর যাওয়ার সময় নিয়ে যাচ্ছে শ্রমিকদের। প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এই যাতায়াত নিয়ে তাদের কিছুই জানা নেই। তারা গাড়ি ঘোড়া চলার ব্যাপারে কোন অনুমুতিও দেননি।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘গোটা মুর্শিদাবাদে কয়েকশো বেসরকারি বাস কেরল থেকে এসে আটকে গিয়েছিল লকডাউন এর আগে। তাদের নিয়ে আমরা বেশ কিছুটা সমস্যায় ছিলাম। আমরা চাইছিলাম তারা যত দ্রুত সম্ভব নিজের রাজ্যে ফিরে যায়। এখন বাস গুলি ফিরে যাওয়া শুরু করেছে এটা আমাদের কাছে স্বস্তির খবর।’’ তবে ফিরে যাওয়ার সময় যাত্রী বোঝাই করে ফিরছে কেরল থেকে আসা ঝাঁ-চকচকে ওই বাস গুলি। বাসের চালকদের দাবি একবার কেরল যেতে গেলে কম করে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার তেল খরচ হয় তাদের। ফলে লকডাউনে ভিন রাজ্যে থাকতে গিয়ে মোটা অঙ্কের খরচ হয়ে গিয়েছে তাদের। ফলে ফেরার সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েই ফিরছে তারা। বাসচালক জোসেফ অ্যান্টনি বলছেন, "এমনিতেই লকডাউনে ভিন রাজ্যে থাকা-খাওয়ার বড় একটা খরচ হয়ে গিয়েছে আমাদের। চলে যাওয়ার সময় খালি গাড়ি নিয়ে গেলে কম করে হলেও ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার তেল খরচ হবে। যাত্রী বোঝাই গাড়ি গেলে কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে আমাদের।’’

ডোমকলের পরিযায়ী শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলছেন, "লকডাউনের আগে ঘরে ফিরে গিয়েছিলাম কেরল থেকে। এখানে ফিরে এসে বুঝতে পারলাম যদি এখানেই থেকে যাই তাহলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। ফলে এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা বাসগুলি কখন ছাড়বে সেই অপেক্ষায় ছিলাম। দিন কয়েক থেকেই শুনছি বাস চলাচল শুরু হয়েছে কেরলের উদ্দেশ্যে। ২৭০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে শুক্রবার রওনা দিচ্ছি কেরলের উদ্দেশ্যে।" তার দাবি, আর যাই হোক সেখানে গেলে কিছু একটা কাজ মিলে যাবে। রফিকুলের বাবা ৮০ বছরের বৃদ্ধ জয়নাল মন্ডল বলছেন, ‘‘ভেবেছিলাম ছেলেটা বাড়িতে থাকলে কিছু না কিছু একটা কাজ মিলে যাবে। কিন্তু কাজ মেলেনি। ফলে নিজে থেকেই রফিকুলকে বলেছি ভিন রাজ্যে চলে যাওয়ার জন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Migratory Labourer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE