Advertisement
E-Paper

স্বামীর খোঁজে এসে খুন স্ত্রীকে

গত মাসে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনের আগে একাধিক বার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্য হয়েছে হাতিশালায়। রাতভর বোমার শব্দে কেঁপে উঠেছে গ্রাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:২৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

স্বামীকে খুঁজছিল দুষ্কৃতীরা। স্ত্রী বেরিয়ে এসে চেঁচামেচি করলে তাঁকেই সটান গুলি করে দেয় তারা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশ জানায়, নিহতের নাম মর্জিনা বিবি (২৮)। বাড়ি চাপড়ার হাতিশালা গ্রামে। তাঁর তিন সন্তান রয়েছে। পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন হয়েছে। তবে জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মাঠে জল দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন হয়েছে।”

গত মাসে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনের আগে একাধিক বার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্য হয়েছে হাতিশালায়। রাতভর বোমার শব্দে কেঁপে উঠেছে গ্রাম। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বোর্ড গঠন হয়ে গেলেও তলায়-তলায় এখনও আঁচ রয়েছে।

চাপড়া ব্লকের হাতিশালা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনেই তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। কিন্তু কে পঞ্চায়েত প্রধান হবেন তা নিয়ে গোড়া থেকেই দুই পক্ষে বিবাদ শুরু হয়। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, এক দিকে রয়েছেন বিদায়ী উপপ্রধান লিয়াকত আলি মণ্ডল, অন্য দিকে বিধানসভা ভোটের পরে সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কউসর শেখ। দুজনের বাড়িই ওই গ্রামে। এবং তাঁদের বিবাদ দীর্ঘদিনের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পরে বোমা মেরে এক তৃণমূল কর্মীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল কউসরের বিরুদ্ধে। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়া ইস্তক এলাকার দখল নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ শুরু হয়। কউসরের সঙ্গে যোগ দেন দলেরই কিছু লিয়াকত বিরোধী পুরনো তৃণমূল কর্মী, যাঁরা এ বারে টিকিট পাননি।

বিরোধীহীন হাতিশালায় ভোট হয়নি। কিন্তু প্রধান নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। দিন কয়েক আগেও রাতে বোমার শব্দে কেঁপে উঠেছিল হাতিশালা গ্রাম। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সমাজবিরোধী বলে পরিচিত ইনু শেখদের সঙ্গে নিয়ে লিয়াকত এবং মতিন শেখদের সঙ্গে নিয়ে কউসর প্রতিপত্তি জাহির করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিবাদের জেরে সারারাত ধরে বোমাবাজি চলে। পুলিশ হাজির থাকা সত্ত্বেও। সকালে উদ্ধার হন পঞ্চায়েত সদস্য মতিন শেখের ছেলে-সহ তিন জন। পরে কউসর-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। লিয়াকতের লোকজন গ্রামছাড়া হয়।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রের দাবি, নিহত মর্জিনা বিবির স্বামী তাহাজুদ্দিন শেখ কউসরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। লিয়াকতের লোক বলে পরিচিত কিছু দুষ্কৃতী এ দিন বিকেলে তাহাজুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর খোঁজ করে। বিপদ বুঝে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে মর্জিনা চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তখনই এক জন তাঁকে গুলি করে।

তাহাজুদ্দিনের অভিযোগ, “গত বার গন্ডগোলের সময়ে মাঠপাড়া এলাকার কিছু তৃণমূল কর্মী আমার বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেটাই ইনু শেখদের রাগের কারণ। তখনই ওরা আমায় শাসিয়েছিল। সেই রাগ থেকেই ওরা আজ আমায় খুন করতে আসে। আমায় না-পেয়ে আমার স্ত্রীকে খুন করেছে।”

যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুনের অভিযোগ মানতে নারাজ চাপড়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জেবের শেখ। তাঁর দাবি, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। নেহাতই চাষের মাঠে গন্ডগোল থেকে এই খুন।” গ্রামের মানুষ কিন্তু ভয় পাচ্ছেন, খুনোখুনি এখানেই থামবে তো?

Death Woman Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy