প্রতীকী ছবি।
ফের সামনে এসে পড়ল আমপান দুর্নীতি। এ বার সাফাই ‘ওটা ভুলবশত হয়ে গিয়েছে'!
আমপানে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারি সামান্য বিশ হাজার টাকার অনুদান নিয়েও তৃণমূলের বিভিন্ন পঞ্চায়েত-প্রতিনিধিদের দুর্নীতির বিরাম নেই। এ বার সেই তালিকায়, নবগ্রামের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পুত্রবধূর নাম জড়াল।
তবে তা নিয়ে হইচই শুরু হতেই মঙ্গলবার টাকা ফিরিয়ে পঞ্চায়েত কর্তার ছোট বৌমা বলছেন, ‘‘আমার অ্যাকাউন্টে ভুল করে টাকা চলে এসেছিল। আমি তো আবেদন করিনি।’’ অভিযোগটা অবশ্য নতুন নয়। ক্ষতিপূরণের টাকা বণ্টনের জন্য তালিকা তৈরি শুরু হতেই স্থানীয় কংগ্রেস এবং বাম নেতারা দাবি করেছিলেন, স্বজনপোষণে একেবারে বোঝাই হয়ে আছে তালিকা। তখন অবশ্য রা কাড়েননি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এরশাদ শেখ। কিন্তু দলনেত্রীর নির্দেশের পরেই দলীয় নেতা-কর্মীদের স্বজনেরা টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করতেই এগিয়ে এসেছেন ‘ছোট বৌমা’ নাজমা পরভিন। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, ‘‘হল তো, এ বার অভিযোগ প্রমাণ!’’
নবগ্রামের ব্লক অফিসে গিয়ে টাকা ফিরিয়ে রশিদ নিয়ে এসে নাজমা এ দিন বলেন, ‘‘অত খেয়াল করিনি, টাকা এসেছে দেখে ফিরিয়ে দিয়ে এলাম।’’ এমন ‘সামান্য টাকা’ নিয়ে এত হইচই অবশ্য কানে তুলছেন না নবগ্রাম ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, সামান্য একটা ভুল, তা নিয়ে এত কথার কী আছে! আর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এরশাদ শেখ বলছেন, ‘‘আমার ছোট বৌমা ভুল করে এমন কাজ করেছে। ওরা আলাদা থাকে তো, তাই জানতেও পারিনি। পরে যখন জানলাম তখন আমিই বললাম টাকা ফিরিয়ে দিতে।’’ ‘ছোট্ট ভুলের’ তত্ত্ব দিচ্ছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ এনায়েতুল্লা-ও, ‘‘ভুল করে টাকা চলে গিয়েছিল। তবে যাঁদের কাছে গিয়েছে তারা টাকা তো ফিরিয়ে দিয়েছে, কেউ তো নয়ছয় করেননি।’’ যা শুনে নবগ্রামের সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক মুকুল মণ্ডল বলছেন, ‘‘তৃণমূলের এই ছিঁচকে চুরির স্বভাবটা গেল না। কুড়ি হাজার টাকা দেখেও লোভ সামলাতে পারছে না। আসলে কী জানেন, সামনের নির্বাচনে তো আর প্রত্যাবর্তনের কোনও সুযোগ নেই তাই লুটেপুটে খাচ্ছে দলীয় কর্মীরা।’’ কিন্তু সব আবেদন খতিয়ে দেখার পরেও পাকা ঘর থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণের টাকা বরাদ্দ হল কী করে? নবগ্রামের বিডিও অমূল্যচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘টাকা আসার পর ফের তদন্ত করা হয় সেখানে যাঁদের পাওয়ার কথা নয় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।’’ তা হলে প্রথম দফার তালিকা তৈরির সময়ে যথাযথ খতিয়ে দেখলে হত না? সে প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy