Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মালিক পক্ষ এল বৈঠকে, মিটল না তাঁত-জট

২০১৫ সালের পর থেকে পাঁচ বছর মজুরি বাড়েনি নবদ্বীপের তাঁত শ্রমিকদের। অথচ দ্রব্যমূল্য বেড়েছে কয়েক গুণ। মজুরি বৃদ্ধির জন্য মালিক পক্ষের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়েও ফল না হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

ফের সেই ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে যা-ও বা মালিক পক্ষকে আলোচনায় আনা হল, নবদ্বীপের তাঁত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র মিলল না। দু’পক্ষ নিজের অবস্থানে অনড় থাকায় টানা ছ’ঘণ্টার আলোচনা কার্যত নিস্ফল হয়ে গেল। ফলে পুজোর মরসুমে স্বরূপগঞ্জে যন্ত্রচালিত তাঁত চালু হওয়ার সম্ভাবনা এখনও বিশ বাঁও জলে।

২০১৫ সালের পর থেকে পাঁচ বছর মজুরি বাড়েনি নবদ্বীপের তাঁত শ্রমিকদের। অথচ দ্রব্যমূল্য বেড়েছে কয়েক গুণ। মজুরি বৃদ্ধির জন্য মালিক পক্ষের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়েও ফল না হয়নি। শেষে গত ১ জুলাই থেকে আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকেরা। ৩০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি-সহ নানা দাবিতে সিটু সমর্থিত নদিয়া জেলা তাঁতশ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে এই আন্দোলন প্রায় সর্বাত্মক চেহারা নিয়েছে গত এক মাসে। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সত্তরটি যন্ত্রচালিত তাঁতের প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক তাতে শামিল হয়েছেন।

এই অবস্থায় শ্রমিক, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে একাধিক বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের চেষ্টা করেছিল প্রশাসন। বারবার তাঁত মালিকদের অনুপস্থিতিতে তা ভেস্তে যায়। শেষে সোমবার মহকুমাশাসকের দফতরে আলোচনার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্ত দীর্ঘ আলোচনায় লাভ কিছুই হল না।

সন্ধ্যায় মালিক পক্ষের তরফে মণীন্দ্র দেবনাথ বলেন, “আমাদের বক্তব্য, কারখানা বন্ধ করে আলোচনা হতে পারে না। আগে কারখানা খুলে দেওয়া হোক, তার পরে মজুরি বৃদ্ধি সংক্রান্ত আলোচনা হবে। কিন্ত শ্রমিকেরা তাতে রাজি না হননি। ফলে বৈঠক ফলপ্রসূ হল না।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আগামী সোমবার ফের আলোচনার দিন ঠিক হয়েছে। আমরা আসব। কিন্তু যদি তার মধ্যে কারখানা না খোলে, তা হলে আমরা আলোচনায় বসব না।”

বৈঠক শেষে সিটুর জেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম সাদি পাল্টা বলেন, “মালিক পক্ষের দাবি অনুয়ায়ী শর্তহীন ভাবে কারখানা আগে খুলে তবে আলোচনা করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ খোলা রাখলাম। এ বার বাকিটা মালিকদের হাতে।” তবে এ দিনের বৈঠককে পুরোপুরি নিষ্ফল বলতে রাজি নন প্রবীণ শ্রমিক নেতা। তাঁর দাবি, “এ দিন মালিকেরা আলোচনায় এসেছেন এবং আমাদের দাবি মতো শতাংশ হিসাবে মজুরি বাড়াতেও রাজি হয়েছেন। কিন্তু ওঁরা শর্তহীন ভাবে কারখানা খোলার যে দাবি রেখেছেন, শ্রমিকেরা তা মানতে চাননি।”

অন্তত এক সপ্তাহ অতএব স্নায়ুর লড়াই বহাল রইলই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nabadwip Weaving Labour Wages
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE