Advertisement
০২ মে ২০২৪
Cyber case conviction

দুই ছাত্রীর স্নানের দৃশ্য তুলে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ, প্রধানশিক্ষককে ২০ বছরের জেলের সাজা আদালতের

আবাসিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক দুই ছাত্রীর স্নানের দৃশ্য মোবাইলে তুলে রাখেন। তার পর তা দেখিয়ে দিনের পর দিন দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। মঙ্গলবার সেই মামলারই সাজা ঘোষণা করল আদালত।

Image of the head master convicted in a rape case

২০ বছরের জেলের সাজা ঘোষণা আদালতের। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৪
Share: Save:

দুই মাধ্যমিক পড়ুয়ার স্নানদৃশ্য তুলে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের মামলায় আবাসিক স্কুলের প্রধানশিক্ষকের ২০ বছরের জেলের সাজা দিল আদালত। জেলায় সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম সাজা ঘোষণা করলেন নদিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (দ্বিতীয়) সুজিতকুমার ঝা। একই সঙ্গে অভিযুক্তকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের জেল।

নদিয়ার চাপড়ায় একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলে প্রধানশিক্ষকের চাকরি করতেন ইনজামুল হক। আবাসিক স্কুলের হস্টেলে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা থাকত। সেখানেই দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর স্নানের দৃশ্য মোবাইলবন্দি করেন ইনজামুল। পরবর্তী সময়ে সেই ছবি বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রধানশিক্ষক দিনের পর দিন দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনায় ওই শিক্ষককে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে কৃষ্ণনগরের পকসো আদালত। নিগৃহীতা দুই ছাত্রী-সহ মোট ১৩ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এই রায়।

নিগৃহীত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গর্ভনিরোধক বড়ি খাইয়ে দিনের পর দিন ধরে শিক্ষক কুকর্ম করে যেতেন। একটা সময় দুই ছাত্রীই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা বাড়ি চলে যায়। তাদের ফিরে আসার জন্য অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক হুমকি দিলেও তারা আবাসিক স্কুলে ফিরে না আসায় স্নানের ছবি ভাইরাল করে দেন অভিযুক্ত শিক্ষক। ২০২২-এর অক্টোবরে কৃষ্ণনগরের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীতা ছাত্রীদের অভিভাবকেরা।

প্রথমে পালিয়ে বেড়ালেও শেষপর্যন্ত ২০২৩–এর জানুয়ারিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় পুলিশ। শুরু হয় মামলা। এ দিকে মুখ বন্ধ করতে সাক্ষীদের হুমকি দিতে শুরু করেন ইনজামুল। তার বিরুদ্ধে কলকাতা হইকোর্টে এই অভিযোগ তুলে মামলাও করে এক ছাত্রীর পরিবার।

মামলার সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময়ে দুই ছাত্রীকে ঘরে ডেকে ধর্ষণ করছিলেন আবাসিক স্কুলের বছর ছাব্বিশের প্রধানশিক্ষক। অন্য কাউকে ঘটনার কথা জানালে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে দু’জনকে হুমকি দিয়ে লাগাতার অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। যৌন নির্যাতনের জেরে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে তারা বাড়ি ফিরে যায়। এ দিকে ছাত্রীদের নাগাল না পেয়ে রাগের মাথায় তাদের আপত্তিকর ছবি সমাজমাধ্যমে আপলোড করে দেন ইনজামুল।’’ প্রসঙ্গত, নদিয়া জেলায় এই প্রথম সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে সাজা ঘোষণা করল আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chapra Head Master
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE