Advertisement
E-Paper

চিকিৎসায় গাফিলতি, ক্ষতিপূরণ ৭ লক্ষ

রোগ ধরা পড়েছিল। কিন্তু সময়মতো সেই রোগের চিকিৎসা শুরু হয়নি। কৃষ্ণনগরের একটি নার্সিংহোম ও চিকিৎসকের গাফিলতির মাসুল গুণতে হচ্ছে মাজদিয়ার এক শিশুকে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে ওই শিশুর বাবা বছর দু’য়েক আগে কৃষ্ণনগরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেছিলেন। মঙ্গলবার সেই মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০২:১৩
অসুস্থ রূপম।—নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ রূপম।—নিজস্ব চিত্র

রোগ ধরা পড়েছিল। কিন্তু সময়মতো সেই রোগের চিকিৎসা শুরু হয়নি। কৃষ্ণনগরের একটি নার্সিংহোম ও চিকিৎসকের গাফিলতির মাসুল গুণতে হচ্ছে মাজদিয়ার এক শিশুকে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে ওই শিশুর বাবা বছর দু’য়েক আগে কৃষ্ণনগরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেছিলেন। মঙ্গলবার সেই মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে।

শিশুটির পরিবারকে ৭ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩২১ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের প্রেসিডেন্ট প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই সদস্য শ্যামলকুমার ঘোষ ও রীতা রায় চৌধুরী মালাকার। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে চিকিৎসক ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে গত ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে মাজদিয়ার সমীর বিশ্বাসের সদ্যোজাত পুত্রসন্তান অসুস্থ হয়। সমীরবাবু ছেলেকে নিয়ে আসেন কৃষ্ণনগরের শিশু বিশেষজ্ঞ টি কে দাসের কাছে। তারপর থেকে অসুখ-বিসুখে ওই চিকিৎসকের কাছেই ছেলেকে আনতেন সমীরবাবু। ২০১১ সালের ৭ জুন ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে রূপম বিশ্বাস নামে ওই শিশু। টি কে দাসকে দেখানোর পরে তাঁর কথা মতো কৃষ্ণনগরের নেদেরপাড়ার সানভিউ নার্সিংহোমে তাকে ভর্তি করানো হয়।

রূপমের পেট ব্যথার পাশাপাশি ডান হাত ফুলে গিয়েছিল। টি কে দাস রূপমের ডান হাতের রোগকে সেলুলাইটিস রোগ হয়েছে বলে প্রেসক্রিপশনে উল্লেখ করেন। কিন্তু তিনি শুধু পেট ব্যথার চিকিৎসা করে যান বলে অভিযোগ। এ ভাবে নার্সিংহোমে প্রায় ১১ দিন চিকিৎসা চলার পরে ১৮ জুন ওই চিকিৎসক রূপমকে কলকাতায় এক অস্থি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠিয়ে দেন। সেখানে গিয়ে রূপমের বাবা সমীরবাবু জানতে পারেন, সেলুলাইটিস ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগ। এই ধরনের রোগে হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কলকাতার ওই চিকিৎসক তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে, ওই রোগের কারণে রূপমের ডান হাতের কবজি ও কনুইয়ের মাঝে হাড়ের ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রূপমের এখনও ভেল্লোরে চিকিৎসা চলছে।

সমীরবাবুর পক্ষের আইনজীবী শুভাশিস রায় জানান, শিশু বিশেষজ্ঞ টি কে দাস রূপমের হাতের রোগ ধরতে পেরেছিলেন। কিন্তু সেই রোগের চিকিৎসা করেননি। ১১ দিন নার্সিংহোমে ফেলে রেখে তিনি শুধু পেটের রোগের চিকিৎসা করেছেন। তারপরে হাতের ব্যথা সারানোর জন্য তিনি কলকাতায় আর একজন চিকিৎসকের কাছে স্থানান্তরিত করেন। এই দেরির ফলে ওই শিশুর ডান হাতের হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব কিছু দেখে এ দিন ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রায় দিয়েছে।

সানভিউ নার্সিংহোমের ম্যানেজার সুব্রত দাস বলেন, “চিকিৎসার বিষয়ে যা বলার চিকিৎসক বলবেন। আমরা এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” চিকিৎসক টি কে দাসকে এ দিন একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও কোনও উত্তর দেননি। মিষ্টির দোকানের কর্মী সমীরবাবু বলছেন, ‘‘চিকিৎসক ঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে আমার ছেলের এত বড় সর্বনাশ হত না। আদালতের রায়ে আমি খুশি।’’

Doctor Patient Money Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy