E-Paper

গরুর গাড়ির চাকা থেকে হর্তাকর্তা নিতাই

ব্যবসায়ী মহলের অনেকেরই দাবি, এক সময়ে বিশ্বনাথ ও নিতাই যৌথ ভাবে ব্যবসা করতেন। পরে নিতাই নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন ও ব্যবসা বাড়িয়ে অন্যান্য রেশন ডিলারদের নিজের ছত্রচ্ছায়ায় নিয়ে আসেন।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৯
নিতাই ঘোষের চালকলে সিআরপিএফ জওয়ান। শনিবার রানাঘাটে। ছবি সুদেব দাস।

নিতাই ঘোষের চালকলে সিআরপিএফ জওয়ান। শনিবার রানাঘাটে। ছবি সুদেব দাস।

ছোট একটা বেড়ার ঘরে বাবার সঙ্গে গরুর গাড়ির চাকা তৈরির কাজ করতেন তিনি। বর্তমানে রেশন সামগ্রীর ব্যবসা ছাড়াও চালকলের মালিক সেই নিতাই ঘোষই।

এলাকার মানুষজন শুধু নিতাইয়ের এই জাদুকরী উত্থানে বিস্মিতই নন। তাঁরা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীলাভের সঙ্গে তাঁর জীবনযাত্রাতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। শনিবার সকালে রানাঘাট শহরের ওল্ড বহরমপুর রোডের পাশে থাকা তাঁর বাড়িতে ইডি হানা দিতেই প্রতিবেশী ও শহরের ব্যবসায়ীদের আলোচনার মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় রানাঘাট শহরের রেশন ডিলার বিশ্বনাথ পালের দোকানের কর্মী ছিলেন নিতাই। অল্প দিনের মধ্যেই পাল পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করেন তিনি। তার পর রেশন ডিলারের লাইসেন্সও হাতে আসে নিতাইয়ের। শুরু হয় রেশন সামগ্রীর ব্যবসা। রাস্তার পাশে তাঁদের গরুর গাড়ি চাকা তৈরি করার ভাঙাচোরা ঘরটা এখনও রয়েছে।

তার পাশেই উঠেছে তিনতলা বাড়ি। বছর আটেক আগে আনুলিয়ায় চালকল তৈরি করে ব্যবসার পরিধি বাড়ান নিতাই। রানাঘাট রেল বাজারে তাঁর পাইকারি মুদির দোকানও রয়েছে।

ব্যবসায়ী মহলের অনেকেরই দাবি, এক সময়ে বিশ্বনাথ ও নিতাই যৌথ ভাবে ব্যবসা করতেন। পরে নিতাই নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন ও ব্যবসা বাড়িয়ে অন্যান্য রেশন ডিলারদের নিজের ছত্রচ্ছায়ায় নিয়ে আসেন। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, যৌথ ভাবে ব্যবসা করার সময় থেকেই রেশন সামগ্রী কালোবাজারি করার কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় খাদ্য সরবরাহ দফতরের দেওয়া রেশন সামগ্রীর বদলে নিম্নমানের সামগ্রী উপভোক্তাদের দেওয়ার অভিযোগ ছিল। আগে অবশ্য ওই রেশন সামগ্রী বদলের জন্য অন্য চালকলের উপর নির্ভর করতে হতো নিতাইকে। বর্তমানে নিজের চালকল হওয়ায় সেই কাজও অনেকটাই সহজ হয়েছে।

নিতাইয়ের পাড়াপড়শিদের অনেকের দাবি, রেশন সামগ্রী নিয়ে অবৈধ কারবার করার জন্য বাম জামানা থেকেই পুলিশ, প্রশাসন ও নেতাদের হাত ছিল তাঁর মাথায়। তাঁর বাড়ির অনুষ্ঠানেও অনেক রথী-মহারথীকে আসতে দেখা গিয়েছে। প্রভাবশালীদের সহযোগিতা ও সমর্থন না থাকলে নিতাইয়ের আধিপত্য বিস্তারের পথ সহজ হত না। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান মঞ্চে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি।

নিতাই ঘোষ নিজে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের রানাঘাট শাখার সম্পাদক। তাঁর বিষয়ে জানতে সংগঠনের নদিয়া জেলা সম্পাদক রেজাউল করিমকে ফোন করা হলে প্রথমে তিনি বলেন, “পরে কথা বলব।” পরে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat Corruption

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy