Advertisement
E-Paper

ধর্মঘট হল শান্তিতেই

বুধবার সকাল থেকে অধিকাংশ জায়গায় দোকানপাট ছিল বন্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১২
রানাঘাটে বাম ও কংগ্রেসের মিছিল।ছবি: প্রণব দেবনাথ

রানাঘাটে বাম ও কংগ্রেসের মিছিল।ছবি: প্রণব দেবনাথ

কেন্দ্রীয় অর্থনীতি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে দেশ জোড়া শ্রমিক ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়ল বিজেপির দখলে থাকা রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে। যদিও কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে এক মাত্র বিজেপির ছত্রচ্ছায়ায় থাকা সংগঠনই ধর্মঘটে যোগ দেয়নি। বাম নেতাদের অনেকের মতেই, পূর্বঘোষিত ১১ দফা দাবির সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বাতিলের দাবি যুক্ত হওয়ায় বহু মানুষ ধর্মঘট সমর্থন করেছেন।

বুধবার সকাল থেকে অধিকাংশ জায়গায় দোকানপাট ছিল বন্ধ। অনেক জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি দফতর খোলা থাকলেও পড়ুয়া এবং সাধারণ মানুষের আনাগোনা ছিল না বললেই চলে। ধর্মঘট সফল করার জন্য সকাল থেকেই সক্রিয় ছিল বাম ও কংগ্রেস সমর্থকেরা। নানা সরকারি দফতরের সামনে দলীয় পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘোরেন ধর্মঘটীরা। যে সব ব্যবসায়ী দোকান খুলেছেন, তাঁদের সে সব বন্ধ করার অনুরোধ জানান। রানাঘাট ও চাকদহের মতো কয়েকটি জায়গায় বিজেপি ধর্মঘট ব্যর্থ করার আহ্বান জনিয়ে মিছিল বার করেছিল। কিন্তু বিজেপি বা তৃণমূল পথে নেমে বাধা না দেওয়ায় তেমন অশান্তি হয়নি।

রানাঘাট শহর ছাড়াও শান্তিপুর বা বাদকুল্লার মতো জায়গাতেও ভাল প্রভাব পড়েছে ধর্মঘটের। মিশ্র প্রভাব পড়েছে তাহেরপুর বা ফুলিয়ার মতো এলাকাগুলিতে। সকালেই বাদকুল্লায় মিছিল করে সিপিএম। রানাঘাট-কৃষ্ণনগর শাখায় বাদকুল্লা আর তাহেরপুরে সামান্য সময়ের জন্য রেল অবরোধও করা হয়। শান্তিপুরেও সামান্য সময়ের জন্য রেল অবরোধ হয়েছে। পরে ট্রেন চললেও যাত্রী ছিল অন্য দিনের তুলনায় ছিল বেশ কম। সকালে শিমুরালি চৌমাথায় জাতীয় সড়কে অল্প সময়ের জন্য প্রতীকী অবরোধ করেছিল বন্ধ সমর্থকেরা। বাদকুল্লাতেও কিছু ক্ষণ কৃষ্ণনগর-রানাঘাট রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বামেরা। সকাল থেকেই বেসরকারি বাস সে ভাবে চোখে পড়েনি। ট্রেকার-অটোও তেমন দেখা যায়নি।

বেশির ভাগ জায়গাতেই ডাকঘর এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও বন্ধ ছিল। ওই সব অপিসের সামনে পতাকা টাঙিয়ে পিকেটিং করেছেন ধর্মঘটীরা। রানাঘাট আদালতে আইনজীবীদের বিশেষ দেখা যায় নি। তবে শান্তিপুরে পুর ছাত্র যুব উৎসব পালিত হয়েছে স্বাভাবিক নিয়মেই। এ ছাড়া, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী শান্তিপুরে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের শংসাপত্র দেওয়ার কাজও হয়েছে নির্বিঘ্নে।

রানাঘাট রেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা পিন্টু সরকার বলেন, “সকালে অনেক দোকান বন্ধ ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকানপাট খুলেছে। অনেকে সন্ধ্যার পর দোকান খুলেছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘দোকান বন্ধ থাকাটা ধর্মঘটের পক্ষে রায় নয়। অনেকে ভয়ে দোকান বন্ধ করেছে। অনেকে স্রেফ ছুটির দিন কাটিয়েছে।”

রাস্তায় নেমে ধর্মঘটে বাধা দেওয়ার কোনও নির্দেশ জেলা তৃণমূলের কাছে ছিল না। বিজেপিও জানিয়েছিল, তারা সংঘাতে যাবে না। এই ধর্মঘট ব্যর্থ বলে দাবি করে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, “এই ধর্মঘট মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। ট্রেন আটকে মানুষকে সমস্যায় ফেলা হয়েছে।”

জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে পাল্টা দাবি করেন, “ধর্মঘটে মানুষ সাড়া দিয়েছে।” আরএসপির শ্রমিক সংগঠন ইউটিউসি-ও ধর্মঘট ‘সফল’ করার জন্য সর্বসাধারণকে অভিনন্দন জানিয়েছে। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “ধর্মঘটে কোনও অশান্তির খবর নেই।”

কল্যাণী শহরে একাধিক ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। সকালে সেন্ট্রাল পার্ক ও ভূষণের মোড়ের একাধিক ব্যাঙ্কে গিয়ে ধর্মঘট সফল করার আবেদন জানান বাম সমর্থকেরা। সেন্টাল পার্কের ডাকঘরও খোলা হয়নি। কিন্তু রাজ্য সরকারি অফিসগুলির হাজিরা স্বাভাবিক ছিল। কাঁচরাপাড়া বা জাগুলি যাওয়ার বাস চলেছে। বিভিন্ন রুটের অটো এবং টোটোও চলেছে। কল্যাণী শহরের বেশির ভাগ দোকানই খোলা ছিল। গয়েশপুর এবং হরিণঘাটাতেও তেমন প্রভাব পড়েনি।

Trade Union CPM Bandh Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy