পাশ কাটিয়ে, ডিঙিয়ে, কৈউ বা নাকে কাপড় চাপা দিয়ে সরে যাওয়ার আগে ছুঁড়ে দিচ্ছেন— ‘উঃ পারা যায় না, যত্তসব’।
ব্যস্ত রাস্তার উপরে পড়ে আছে লোকটা। শরীরে পোশাক নেই। পায়ের ক্ষতে ভন ভন করছে মাছি।
কলকাতার এমন এড়িয়ে যাওয়া চেহারা চোখে পড়েছে বার কয়েক। এ বার তার হাত ধরল কৃষ্ণনগরও।
সকালভর পড়ে থাকার পরে, শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে মহকুমা শাসকের হস্তক্ষেপে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে শনিবার উদ্ধার করল ওই মাঝ বয়সি ভবঘুরেকে। ভর্তি করানো হয়েছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। পায়ে পচন ধরা ওই ভবঘুরের পরিচয় অবশ্য জানা যায়নি।
মল্লিকপাড়া মাঠের কাছে তালপুকুর রোড। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এ দিন সকাল থেকেই লোকটিকে পড়ে তাকতে দেখছেন তাঁরা। এর ণদ্যে চড়া রোদ থেকে পাশের গাছতলায় তাঁকে টেনে সরিয়ে দেন দুই টোটো চালক। ব্যাস, শহরের মানবিক মুখ বলতে এটুকুই।
সেই টোটো চালক উত্তম দাস বলছেন, “আমি আর কি করব, এই রাস্তা দিয়ে বার দুয়েক যাতায়াতের পথে দেখলাম। তাই সরিয়ে দিলাম। আর কীই বা করতে পারি।’’
তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান চিকিৎসা করাতেই এ শহরে এসেছিল লোকটি। যে এলাকায় তাকে পাওয়া গিয়েছে, সেই তালপুকুর রোডে বেশ কিছু চিকিৎসকের চেম্বার রয়েছে। সেখানেই কাউকে দেখাতে এসেছিল বলে মনে করছে পুলিশও। সতার অসুস্থকার সুযোগে কেউ তার সব হাতিয়ে এ ভাবে ফেলে রেখে গিয়েছে। তবে ওই মাঝ বয়সী লোকটি তার নাম-ঠিকানা বলতে পারেনি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভাল করে কথা বলার মতো অবস্থাতেও নেই লোকটি। মহকুমা শাসক ইউনিস রিশিন ইসমাইল বলেন, “লোকটির চিকিৎসার সব ব্যবস্তা করা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সে ব্যাপারে কথা হয়েছে। তিনি সেরে উঠলে তাঁর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা কাটবে।’’