Advertisement
E-Paper

তৃণমূলকে রুখতে ধুলিয়ানে মহাজোট

এক সময়ের বাম দুর্গেই প্রার্থী দিতে পারেননি নেতৃত্ব। উল্টে ফব কাউন্সিলার জোড়াফুলের প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন। ধুলিয়ানের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সেই তৃণমূল প্রার্থীকে হারাতে সিপিএম নেতৃত্ব এখন আস্থা রাখছেন কংগ্রেস, বিজেপি-র মহাজোটের উপরে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটের লড়াই ঘিরে রীতিমতো সরগরম ১৭ নম্বর ওয়ার্ড। তৃণমূল প্রার্থী বসুমতী সিংহ ১৯৯৫ এবং ২০১০ সালে দু’বার কাউন্সিলার হয়েছিলেন ফব-র টিকিটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩৬
তৃণমূল প্রার্থী বসুমতী সিংহ (বাঁ দিকে), জোটের প্রার্থী নীলাঞ্জনা সিংহ।

তৃণমূল প্রার্থী বসুমতী সিংহ (বাঁ দিকে), জোটের প্রার্থী নীলাঞ্জনা সিংহ।

এক সময়ের বাম দুর্গেই প্রার্থী দিতে পারেননি নেতৃত্ব। উল্টে ফব কাউন্সিলার জোড়াফুলের প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন। ধুলিয়ানের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সেই তৃণমূল প্রার্থীকে হারাতে সিপিএম নেতৃত্ব এখন আস্থা রাখছেন কংগ্রেস, বিজেপি-র মহাজোটের উপরে।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটের লড়াই ঘিরে রীতিমতো সরগরম ১৭ নম্বর ওয়ার্ড। তৃণমূল প্রার্থী বসুমতী সিংহ ১৯৯৫ এবং ২০১০ সালে দু’বার কাউন্সিলার হয়েছিলেন ফব-র টিকিটে। ২০০৫ সালে তাঁর স্বামী শিবশঙ্কর সিংহ ফব প্রতীকেই জিতে ধুলিয়ানের উপ পুরপ্রধান হয়েছিলেন। এলাকায় তাঁরা পরিচিত মুখ। এই পরিস্থিতিতে বসুমতীদেবী দলবদল করায় দিশাহারা বাম শিবির। প্রার্থী দিতে পারেনি কংগ্রেস-বিজেপিও। এই পরিস্থিতিতেই তৈরি হয়েছে মহাজোট। সকলেই সমর্থন করছেন নির্দল নীলাঞ্জনা সিংহকে। ২০০৫ সালে এই ওয়ার্ডে লড়াই হয়েছিল দুই বাম শরিক ফব ও আরএসপির মধ্যে। টসে জিতে কাউন্সিলার হয়েছিলেন ফব-র শিবশঙ্কর সাহা। ২০১০ সালেও আরএসপি-র প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছিল ফব। ১২৬টি ভোট পেয়ে সে দিন জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল তৃণমূলের। সে দিনের জয়ী ফব প্রার্থী বসুমতীই এ বার তৃণমূলে। ধুলিয়ানের পুর রাজনীতিতে পরিচিত মুখ বসুমতী। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, বাম রাজনীতির হাত ধরে উঠে আসা বসুমতী নিজের এলাকাকে শুধু ভালমত চেনেন তাই নয়, কাজও করেন। তার ফলেই বাম-ডান শিবির নয়— বড় হয়ে উঠেছে ‘ব্যক্তি বসুমতী’। সেই পরিচিতিই মহাজোটকে ফেলেছে ঘোর সঙ্কটে।

বসুমতীর বিরুদ্ধে মহাজোটের প্রার্থী নীলাঞ্জনা সিংহ। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, তাঁর দাদু বিজয়কুমার সিংহ ১৯৬৪ সালে ধুলিয়ানের কাউন্সিলার হয়েছিলেন। তারপর থেকে পরিবারে সক্রিয় রাজনীতির তেমন চল নেই। নীলাঞ্জনার বাবা শশাঙ্ক মোহন সিংহ গরীব শ্রমিক। সদ্য কলেজ ছেড়েছে নীলাঞ্জনা। রাজনীতির আঙিনায় সে তেমন পরিচিত মুখও নয়। এমন পরিবারের মেয়ে হঠাৎ করে রাজনীতিতে কেন? তা-ও আবার সরাসরি একেবারে ভোটের ময়দানে?

এ ব্যাপারে কাকাই যে তাঁর অনুপ্রেরণা তা জানাচ্ছেন নীলাঞ্জনা। কাকা সৃজন সিংহ পেশায় শিক্ষক। সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সৃজনবাবু বলেন, ‘‘বাম প্রার্থী হিসেবে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ঠিক করেননি বসুমতী। এটাকে রাজনৈতিক ব্যভিচার ছাড়া আর কি বা বলা যায়?’’ ‘‘ঘৃণ্য রাজনীতির প্রতিবাদ করতেই সকলে মিলে ভাইজিকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস সকলের সমর্থন নিয়েই এই লড়াই’’— বলছেন সৃজনবাবু। শান্ত, ধীরস্থির স্বভাবের বলেই পরিচিত নীলাঞ্জনা। তিনি শুধু বলেন, ‘‘স্বচ্ছ, সুস্থ সমাজ গড়তেই ভোটে দাঁড়িয়েছি।’’

সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক মহম্মদ আজাদ বলেন, ‘‘নীলাঞ্জনা নির্দল প্রার্থী। দল তার পাশে আছে। এলাকার সব বাম কর্মী তাঁর হয়ে প্রচারে নেমেছে। দল বদলের জবাব দিতেই এই লড়াই।’’ কংগ্রেসের কাশীনাথ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে নীলাঞ্জনার পাশেই রয়েছে কংগ্রেস।’’ নীলাঞ্জনারা পুরসভায় গেলে স্বচ্ছতা ফিরবে, দুর্নীতিটা কমবে— মত কংগ্রেস নেতৃত্বের। বিজেপি-র জেলা সভাপতি ষষ্ঠীচরণ ঘোষেরও তাই-ই বিশ্বাস। তবে স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, এই ওয়ার্ডে শাসক দলের প্রার্থীকে তলে তলে ফব সমর্থন করছে। অভিযোগ উড়িয়ে না দিয়ে স্থানীয় ফব নেতা ইউসুফ হোসেন বরং বলছেন, ‘‘আমার ধারণা দল নয়, ব্যক্তিগত কাজ ও প্রভাবের জোরেই বসুমতী সিংহ জয়ী হবেন।’’ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী। বসুমতী সিংহ শুধু বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থেকেছি। জয়ের ব্যাপারে ষোল আনা নিশ্চিত।’’ দলবদল প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, ‘‘এলাকার কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করা যাচ্ছিল না। তাই এলাকার মানুষের মত নিয়ে ফব ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’

Trinamool municipal election Congress BJP Dhulian CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy