দিদির নিষেধ ছিল— ‘কোনও গণ্ডগোল নয়’। কালীঘাটের সেই বার্তা পৌঁছয়নি হাঁসখালি কিংবা কল্যাণীতে। সিপিএম কর্মীর বাড়ি তাই নছনছ হয় সগুনায়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
ঘড়িতে রাত ন’টা। তার মধ্যেই বেশ সুনসান হয়ে গিয়েছিল হাঁসখালি বাজারের রাস্তা। রাতের নিঃস্তব্ধতা ভাঙল হঠাৎ। পরপর দু’টো বোমার আওয়াজ। হইহই করে এক দল লোক ঢুকে পড়ল বাজারে। মুখে অকথ্য গালিগালাজ। হাতে তৃণমূলের ঝাণ্ডা।
বাজারের ভিতরেই সিপিএমের শাখা অফিস। অভিযোগ, হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল সেটিই। যদিও সে সময় ওখানে কেউ ছিল না। বন্ধ অফিসে চলল বেলাগাম ভাঙচুর। তার পর বেশ কিছু ক্ষণ তাণ্ডব চালিয়ে সিপিএমের পতাকা খুলে শাসক দলের ঝাণ্ডা পুতে দিয়ে বিদায় নেয় দুষ্কৃতীরা।
শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে হাঁসখালিতে। চাপা উত্তেজনা সর্বত্র। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের হুমকি শুরু হয়েছিল গনণার আগে থেকেই। সংবাদমাধ্যমে বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রকাশ হওয়ার পর জল আরও বেশ কিছুটা গড়ায়। বিরোধীদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দিতে শুরু করে তৃণমূলের লোকজন। আর ভোটের ফলপ্রকাশ হতেই বাস্তবায়িত হচ্ছে তাদের সেই ‘প্রতিশ্রুতি’। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সদ্য নির্বাচিত কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক তৃণমূলের সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।’’ উল্টে তাঁর বক্তব্য, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখুন, জোটের এই শোচনীয় ফলের জন্য ওদেরই লোকজন এ সব করেছে কি না।’’ গনণার দিন রাতেও এই হাঁসখালির দক্ষিণপাড়ার একটি কার্যালয়েও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য এসএম সাদি বলেন, ‘‘দাঁত-নখ বের করেছে শাসক দল। দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি আমাদের কর্মীর উপরেও হামলা চলছে। অনেকেই গ্রামছাড়া।’’ যদিও যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরাজিত হওয়ার পরে লজ্জায় মুখ লুকোতে এই ধরনের মিথ্যে গল্প বাজারে ছাড়ার চেষ্টা করছে সিপিএম। আমাদের নেত্রী শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ এই ধরনের কাজের সঙ্গে জড়াবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy