হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে শ্বাসকষ্টে রীতিমতো খাবি খাচ্ছিলেন ভদ্রলোক। রোগীর বাড়ির লোক বার বার ছুটে গিয়েছিলেন কর্তব্যরত নার্সদের দিকে, ‘একটু অক্সিজেন দিন না দিদি’, সাড়া দেওয়া তো দূরের কথা, অভিযোগ, দুই নার্সই ব্যস্ত ছিলেন মোবাইলে। আর তার জেরেই এক সময়ে নিশ্চুপে মারা যান বসিরুদ্দিন আহমেদ (৪৫)।
কান্দি মহকুমা হাসপাতালের ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপারকে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বসিরুদ্দিনের বাড়ির লোক।
মৃতের ভাইপো সাইফুল ইসলাম বলেন, “কাকাকে যখন নিয়ে গেলাম, শ্বাসকষ্টে হাঁসফাঁস করছিল। দু’জন নার্স এক জন হেসে হেসে কতা বলতেই ব্যাস্ত অন্য জন বোধয় হোয়াটস্অ্যাপ করছিলেন। অক্সিজেন দিতে বললেও সাড়াই দেননি।’’
তবে, অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়েছে হাসপাতাল। কান্দি মহকুমা হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মাণ্ডি বলেন, “তিন জন চিকিৎসককে নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। ঠিক-ভুল দেখতে তো হবেই।’’ তবে, তিনি জানান, ওই রোগীকে যে সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, তাতে ওঁর অবস্থা বিশেষ ভাল ছিল না।
বসিরুদ্দিন পেশায় চাষি। বেশ কিছু দিন ধরেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন। তার চিকিৎসা চলছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে শনিবার বাড়ি ফেরার পর ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে য়াওয়া হয়, পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসকেরা দাখের পরেই ভর্তি করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মতো, ওই রোগীকে হাসপাতালে অন্তঃবিভাগে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ, বিপত্তির শুরু সেখানেই। ওয়ার্ড জুড়ে মাত্র দু’জন নার্স, কিন্তু তাঁদের গয়ংগচ্ছ মনোভাব দেখে প্রমাদ গুনেছিলেন রোগীর বাড়ির লোক। বার বার তাঁরা অক্সিজেন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন।
কিন্তু মোবাইল থেকে মুখ তুলে তাঁদের কথা বলার অবকাশই ছিল না! এমনই অভিযোগ বসিরুদ্দিনের বাড়ির লোকের। তাঁরা জানাচ্ছেন, কর্তব্যরত এক নার্স পাল্টা ঝাঁঝিয়ে ওঠেন, ‘সবই যদি বোঝো তা হলে নিজেরাই অক্সিজেন লাগিয়ে দাও। অত তাড়াহুড়ো করলে চলবে না, দেখছ তো ফোন করছি।’
প্রায় আধ ঘন্টা পেরিয়ে য়ায়। তার পর এক সময় নিথর হয়ে য়ান বসিরুদ্দিন। স্বাভাবিক ভাবেই এরপরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওই রোগীর আত্মীয়েরা। তলব হয় পুলিশের। পুলিশই তাঁদের বুঝিয়েসুঝিয়ে শান্ত করে। তাঁদের দাবি, একটু মানবিকতা দেখালে অকালে চলে যেতেন না বসিরুদ্দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy