Advertisement
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Agitation in Hospital

জখম শিশুকে ফেলে রাখার অভিযোগ, মৃত্যুর পর কৃষ্ণনগরের হাসপাতালে ভাঙচুর আত্মীয়দের, তুলকালাম

কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে শনিবার রাতে এক শিশুকে জখম অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছিল। অভিযোগ, বিনা চিকিৎসায় তাকে ফেলে রাখা হয়েছিল। রাতেই তার মৃত্যু হয়।

শক্তিনগর হাসপাতালে মৃত শিশু।

শক্তিনগর হাসপাতালে মৃত শিশু। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১০:০৫
Share: Save:

দুর্ঘটনায় জখম শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন। বিনা চিকিৎসায় দীর্ঘ ক্ষণ তাকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল চত্বরে রাতেই শিশুটির মৃত্যু হয়। তার পর শিশুর আত্মীয়েরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনাটি কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের। মৃত শিশুর নাম লাবনী ঘোষ (৪)। কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত পানিনালা গ্রামের বাসিন্দা ছিল সে। শনিবার রাতে এক দুর্ঘটনায় শিশু ও তার মা জখম হন। দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানে রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। অভিযোগ, শিশুটির আঘাত গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও কোনও চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেননি। হাসপাতালেই তাকে ফেলে রাখা হয়েছিল।

শিশু এবং তার মা দু’জনেরই মাথায় আঘাত লেগেছিল। শিশুটির আঘাত ছিল গুরুতর। অভিযোগ, তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলেও আপৎকালীন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। এমনকি, অনুরোধ সত্ত্বেও উন্নত পরিষেবাযুক্ত হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়নি ওই শিশুকে, জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। শিশুটির মৃত্যু হলে আত্মীয়েরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাতেই ভাঙচুর চালানো হয় হাসপাতালে। একাধিক আসবাবপত্র এবং ওষুধপত্র নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় পুলিশ। তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

শিশুর কাকা নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘দীর্ঘ ক্ষণ পরেও আসেননি কোনও চিকিৎসক। এক জন জুনিয়র চিকিৎসক শিশুটিকে দেখে গিয়েছিলেন, তার পর ফেলে রাখা হয়। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে আমাদের মেয়ের।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, গুরুতর জখম অবস্থায় শিশু এবং তার মাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দু’জনের সিটি স্ক্যান করানো হয়। প্রয়োজনীয় সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষাও করা হয়। শিশুটিকে বাঁচাতে হাসপাতালের তরফে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা হয়েছিল। হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘শিশুদের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আত্মীয়দের আবেগ অনেক সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমরা শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, ওষুধ এবং নার্স সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু চোট এতটাই মারাত্মক ছিল যে আমাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তার মা আমাদের হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। তাঁকে সুস্থ করা এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। বিক্ষোভের ঘটনায় আমরা পুলিশকে খবর দিই, প্রাথমিক ভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’’

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর) সঞ্জয় মিত কুমার মাকোয়ান বলেন, ‘‘পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানালে তদন্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Krishnanagar Nadia Child death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE