E-Paper

অনিয়মিত যক্ষ্মার ওষুধ, আশঙ্কায় রোগীর পরিবার

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র থেকে পাঠানো ওষুধ আগেই ফুরিয়ে গিয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সময়ে সরবরাহ শুরু না-করায় ওষুধের সঙ্কট দেখা দেয়।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ০৫:৫৬
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর যক্ষ্মার উপরে যে পুস্তিকা প্রকাশ করেছে সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, ‘নিয়মিত ওষুধ না খেলে তার ফল মারাত্মক, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে’। অথচ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের টানাপড়েনে পড়ে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ায় ছেদ পড়েছে জেলার বহু যক্ষ্মা রোগীর। স্বাস্থ্য কর্তারাও মানছেন, তাঁরা চেষ্টা করেও ওষুধ খাওয়ায় বিরতি থামাতে পারেননি। ওষুধ খাওয়া অনিয়মিত হয়ে পড়ায় আতঙ্কে রয়েছে জেলার ২২শো যক্ষ্মার রোগীর পরিবার। আশঙ্কা গোপন করছেন না সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের একাংশও।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে রোগীদের ওষুধ সরবরাহের কথা বলে। এত দিন কেন্দ্রীয় সরকার ওষুধ সরবরাহ করত। নির্দেশ মতো রাজ্য সরকার দরপত্র ডেকে একটি সংস্থাকে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্ব দেয়।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র থেকে পাঠানো ওষুধ আগেই ফুরিয়ে গিয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সময়ে সরবরাহ শুরু না-করায় ওষুধের সঙ্কট দেখা দেয়। জেলায় যে পরিমাণ ওষুধ মজুত ছিল তা দিয়ে এপ্রিল মাসের মাধামাঝি পর্যন্ত টেনেটুনে চালানো হয়। তার পরে কোনও কোনও রোগী সাত থেকে ১০ দিন পর্যন্ত ওষুধ খেতে পাননি। কারও ক্ষেত্রে সময়টা আরও বেশি। এই সময় রাজ্য সরকারের নির্দেশে এপ্রিল মাসের শেষ থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা খোলা বাজার থেকে ওষুধ কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ওষুধের জোগান অপ্রতুল হওয়ায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়নি। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘খোলা বাজারে যক্ষ্মার ওষুধ অমিল। ফলে আমরা চেষ্টা করেও পুরোপুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারিনি। ওষুধ খাওয়ায় এ ভাবে ছেদ পড়ায় আমরা আশঙ্কায় রয়েছি।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসের শুরু থেকে রাজ্য সরকারের তরফে ওষুধ সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে তা অনিয়মিত ও পর্যাপ্ত নয়। নদিয়া জেলায় ২২শো রোগীর জন্য মাসে প্রায় চোদ্দো হাজার পাতা ওষুধ লাগে। ১ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত রাজ্য থেকে যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছিল তা পর্যাপ্ত ছিল না। তার ফলে, অনেক রোগী পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত ওষুধ খেতে পাননি। ২২ জুন আবার ওষুধ পাঠিয়েছে রাজ্য। রোগীর আত্মীয়দের একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে দিনের পর দিন ওষুধ অমিল হওয়ায় রোগীদের হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে। জেলা যক্ষ্মা আধিকারিক পার্থপ্রতিম পাত্র বলেন,“যে কোনও কারণে কেন্দ্র থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের তরফে দরপত্র ডেকে ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মাঝ রোগীদের ওষুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। আমরা স্থানীয় ভাবে ওষুধ কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে খোলা বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ না-থাকায় পুরোটা সম্ভব হয়নি। রাজ্য সরকার ওষুধ সরবরাহ শুরু করেছে। আশা করছি সমস্যা আর থাকবে না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tuberculosis TB

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy