Advertisement
E-Paper

‘পাঁচ দিন শুধুই নুন-ভাত খেয়ে কাটিয়েছি’

গত সপ্তাহে সোমবার কাজ থেকে ফেরার পরে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। ভয়ানক সে বৃষ্টিতে ঘরবন্দি হয়েছিলেন তাঁরা। এর পর ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। বুধবার থেকে জল বাড়তে শুরু করে হুহু করে। ক্রমে তিন জনের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত গত রবিবার একটি বাড়ির ইনভার্টার থেকে অনেক অনুরোধ করে একটি মোবাইলে চার্জ দেওয়া সম্ভব হয়। সেই মোবাইলেই তিন জন বাড়িতে কথা বলেন।

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৬
জল নেমেছে বাড়ি থেকে। চলছে কাদা ছেঁচে ফেলার কাজ। নিজস্ব চিত্র

জল নেমেছে বাড়ি থেকে। চলছে কাদা ছেঁচে ফেলার কাজ। নিজস্ব চিত্র

টানা পাঁচ দিন তাঁদের কেউ যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের সঙ্গে। কেরলের আলুর-এ বসে চরম দুশ্চিন্তায় ছটফট করছিলেন নদিয়ার হোগলবেড়িয়া রামনগরের জার্মান শেখ, নাজিবুল মালিথ্যা, ইব্রাহিম মণ্ডল, শফিক শেখ ও সামসুল শেখ। দিন-রাত আতঙ্কে কেটেছে তাঁদের। শেষে রবিবার দুপুরে বাড়ির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পেরেছেন।

কেরল থেকে নাজিবুল সোমবার টেলিফোনে জানান, তাঁরা একই গ্রামের পাঁচজন আলুরের এক সংস্থায় সিমেন্টের ইট তৈরির কাজ করেন।

গত সপ্তাহে সোমবার কাজ থেকে ফেরার পরে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। ভয়ানক সে বৃষ্টিতে ঘরবন্দি হয়েছিলেন তাঁরা। এর পর ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। বুধবার থেকে জল বাড়তে শুরু করে হুহু করে। ক্রমে তিন জনের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত গত রবিবার একটি বাড়ির ইনভার্টার থেকে অনেক অনুরোধ করে একটি মোবাইলে চার্জ দেওয়া সম্ভব হয়। সেই মোবাইলেই তিন জন বাড়িতে কথা বলেন।

জার্মানের কথায়, “আমাদের থাকার জায়গায় জল না-ঢুকলেও চারিদিকে এত জল বাড়ছিল যে মনে হয়েছিল, একটা সময় আমরাও জলে ডুবে যাব। বোধহয় আর কখনও নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারব না। খাবার বলতে সামান্য কিছু চাল। তা নুন দিয়ে ফুটিয়ে পাঁচ দিন খেয়েছি।’’

বন্যায় আটকে পড়া পরিজনদের খোঁজ নিতে ফোন করতে পারেন কেরলের এই হেল্পলাইন নম্বরে:

০৪৭১২৩৩০৮৩৩

জার্মান বলেন, ‘‘বৃষ্টি একটু থামলে আমরা সবাই বাড়ি পরিষ্কার করতে শুরু করি। বালতি করে জল বাইরে ফেলা, বাড়িতে জমা মাটি আর কাদা সাফ করা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দিনের দিন কাজ করে টাকা পাই। কাজ নেই প্রায় এক সপ্তাহ। টাকাও নেই। ইদে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও যাওয়া হচ্ছে না। ছেলে বউয়ের জন্য খারাপ লাগছে।”

রামনগরের বাড়িতে বসে তাঁর স্ত্রী আসুরা বিবি বলেন, “ইদে ও আসতে পারবে না বলে মনখারাপ করবে ঠিক, কিন্তু প্রাণে বাঁচে আছে এর থেকে বেশি আর কিছুই চাওয়ার নেই। পাঁচ দিন কোনও খবর ছিল না। তখন যে মনে কী তোলপাড় চলেছে।’’

Kerala Floods Family Kerala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy