Advertisement
E-Paper

খোঁজ নেয়নি কেউ, ক্ষুব্ধ পদ্মাপাড়

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা আক্ষেপের সুরে বলছেন, ‘‘এমনিতেই ভোটের সময় ছাড়া আমাদের কথা কারও মনে থাকে না। এমন দুর্দিনে রাজনৈতিক দল কিংবা প্রশাসনের কেউই এক বার খোঁজ পর্যন্ত নিতে এলেন না।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২১
প্রণব মণ্ডলের পরিবার। —ফাইল চিত্র

প্রণব মণ্ডলের পরিবার। —ফাইল চিত্র

পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়ে এখনও ঘরে ফেরেননি শিরচরের বাসিন্দা প্রণব মণ্ডল। জলসীমান্ত পেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বিজিবি প্রথমে তাঁকে আটক করে। পরে তাঁকে তুলে দেয় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে। প্রণব কবে ফিরবেন, জানেন না তাঁর বাড়ির লোকজন। সেই ঘটনার পর থেকে অন্য মৎস্যজীবীরাও আর মূল পদ্মায় নেমে ইলিশ ধরতে পারছেন না। তাঁরা কী খাবেন, কী ভাবে সংসার চলবে সে বিষয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে কাকমারি চর ও শিরচর।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা আক্ষেপের সুরে বলছেন, ‘‘এমনিতেই ভোটের সময় ছাড়া আমাদের কথা কারও মনে থাকে না। এমন দুর্দিনে রাজনৈতিক দল কিংবা প্রশাসনের কেউই এক বার খোঁজ পর্যন্ত নিতে এলেন না।’’ রবিবার দুপুরে কাঁদতে কাঁদতে প্রণবের স্ত্রী রেখা মণ্ডল বলছিলেন, ‘‘ঘটনার পরে চার দিন কেটে গিয়েছে। প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী, এমনকি স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধানও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমরা কী খাচ্ছি, কী ভাবে আছি সেই খোঁজটাও নেননি কেউ।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের শুক্লা সরকার তাঁর এলাকার এই অসহায় পরিবারগুলোর খোঁজ নেওয়ার সময় পাননি। ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। প্রশাসনের তরফেও সেই একই অবস্থা। জলঙ্গির বিডিও আজার জিয়াও সাড়া দেননি ফোনে।

তবে কিছুটা হলেও এ দিন আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের তামান্না ইয়াসমিন। তাঁর কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার ঘটনার পর থেকেই আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। শনি ও রবিবার ছুটি থাকার জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সোমবার আমরা ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করব। সব রকম ভাবে তাদের পাশে দাঁড়াব।’’

তবে এমন আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ‘‘নেতাদের এমন কথা আগেও আমরা অনেক শুনেছি। প্রণবকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিএসএফেরও তেমন কোনও হেলদোল নেই। পঞ্চায়েত-প্রশাসনও কোনও রকম সাহায্য করছে না।’’

প্রণব মণ্ডলের বৃদ্ধা মা এখনও পথ চেয়ে আছেন ছেলের। কপাল চাপড়ে বারবার বলছেন, ‘‘আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দাও।’’ অন্য দিকে অসহায় প্রণবের স্ত্রী রেখা মণ্ডল বুঝে গিয়েছেন, তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে আনা খুব একটা সহজ কাজ নয়। ছেঁড়া শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘‘স্বামীকে ফেরানোর মতো আমার সামনে আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ চার সন্তান আর বৃদ্ধা শাশুড়ির মুখে খাবার তুলে দেওয়া। সাহায্য দুরের কথা পঞ্চায়েত, প্রশাসনের কেউ এক বার খোঁজ পর্যন্ত নিল না!’’

Kakmari Firing BGB BSF
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy