E-Paper

এত সিমকার্ড জোগানো কেন, তদন্তে পুলিশ  

গ্রেফতারের পর জেরার মুখে শরমিনা যে দাবি করছে, তা আদৌ কতটা সত্যি তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে তদন্তকারীরা। এমনকি শরমিনা পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও মনে করছে পুলিশের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৬
জেরায় শরমিনা দাবি করেছে তার বাড়ির এলাকায় একাধিক যুবক নাকি ঘুরে ঘুরে সিমকার্ড বিক্রি করে। সেই সিমকার্ড কেনার জন্য কোনও ‘ডকুমেন্ট’ লাগে না।

জেরায় শরমিনা দাবি করেছে তার বাড়ির এলাকায় একাধিক যুবক নাকি ঘুরে ঘুরে সিমকার্ড বিক্রি করে। সেই সিমকার্ড কেনার জন্য কোনও ‘ডকুমেন্ট’ লাগে না। —প্রতীকী চিত্র।

এক সঙ্গে এতগুলি সিমকার্ড কোথা থেকে এল। আর কেনই বা সেগুলি সংশোধনাগারের ভিতরে পাচার করা হচ্ছিল তা নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর জেরার মুখে শরমিনা যে দাবি করছে, তা আদৌ কতটা সত্যি তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে তদন্তকারীরা। এমনকি শরমিনা পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও মনে করছে পুলিশের একাংশ। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য জানতে প্রয়োজনে শরমিনার স্বামীকেও জেলে গিয়ে অথবা ‘শোন অ্যারেস্ট’ করে জেরা করার কথা ভাবা হচ্ছে।

শরমিনার স্বামী মনিরুল শেখ বিচারাধীন বন্দি। বছর তিনেক আগে মাদক পাচারে ধৃত মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়ার বাসিন্দা মনিরুল বর্তমানে কৃষ্ণনগর জেলা সংশোধনাগারে।শুক্রবার শরমিনা স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল। সেই খাবার পরীক্ষা করতে গিয়ে তার ভিতরে ১৩টি সিমকার্ড উদ্ধার করেন কারারক্ষীরা। হাতেনাতে ধরার পর কারারক্ষীরা শরমিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ওই দিনই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মনিরুল স্ত্রীকে ১৫টির মতো সিনকার্ড জোগাড় করে দিতে বলেছিল। কিন্তু শরমিনা ১৩টির বেশি সিমকার্ড জোগাড় করতে পারেনি। শুক্রবার সে ওই সিমকার্ডগুলিই পেঁয়াজের ভিতরে ঢুকিয়ে মনিরুলের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। প্রশ্ন, প্রত্যন্ত এলাকার একজন মহিলা এতগুলি বেনামী সিমকার্ড কোথা থেকে এবং কী ভাবে পেল? এতগুলি সিমকার্ড জেলবন্দি মনিরুলের ঠিক কী কাজে প্রয়োজন হল? কেনই বা সে নির্দিষ্ট করে ১৫টি সিমকার্ড জোগাড় করতে বলেছিল? এ সবের উত্তর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, জেরায় শরমিনা যে দাবি করছে তা সত্যি হলে এর পিছনে বড় চক্রের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। জেরায় শরমিনা দাবি করেছে তার বাড়ির এলাকায় একাধিক যুবক নাকি ঘুরে ঘুরে সিমকার্ড বিক্রি করে। সেই সিমকার্ড কেনার জন্য কোনও ‘ডকুমেন্ট’ লাগে না। তাদের কাছ থেকেই নাকি সে ১৩টি সিমকার্ড কিনেছিল। প্রতিটি সিমকার্ডের জন্য ২৮০ টাকা করে দিতে হয়েছে বলে শরমিনার দাবি।

আর শরমিনার এই দাবিই জেলা পুলিশকে রীতিমত ধন্দে ফেলেছে। কারণ কোনও নথি ছাড়াই যদি বেনামী সিমকার্ড পাওয়া সম্ভব হয় তাহলে তো সেই সিমকার্ড ব্যবহার করে অতি সহজে যে কোনও ধরনের অপরাধ সংঘটিত করা সম্ভব। যে কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীই এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে! তা ছাড়া কী কারণে জেলের মধ্যে মনিরুলের এতগুলি সিমকার্ডের প্রয়োজন হল সেটাও জানার চেষ্টা হচ্ছে। জেরায় শরমিনা অবশ্য জানিয়েছে, এই সিমকার্ডের মাধ্যমে জেলের বাইরে থাকা মাদক পাচার চক্রের অন্যদের যোগাযোগ করে ইদের আগে পরিবারের জন্য কিছু টাকার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল মনিরুল। তার জন্যই এতগুলো সিমের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ফোনে কথা বলতে গিয়ে যদি ধরা পড়ে যায় তাহলে অন্য সিমকার্ড ব্যবহার করত বলে শরমিনার দাবি।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন,“শরমিনার প্রত্যেকটি দাবি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে মনিরুলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SIM Card Krishnanagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy