ঈশিতা-হত্যার পরে পালানোর সময়ে কৃষ্ণনগর থেকে নৈহাটি স্টেশনের মধ্যে চলন্ত ট্রেন থেকে সেভেন এমএম পিস্তলটি ফেলে দিয়েছিল বলে জেরায় তাদের জানিয়েছে ধৃত দেশরাজ সিংহ, দাবি পুলিশের। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সে পিস্তল মেলেনি। উত্তরপ্রদেশথেকে পিস্তলটি আনা হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেলেও, কে, কবে, কী ভাবে তা আনল, পুলিশ নিশ্চিত নয়। আজ, বুধবার এক ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেশরাজকে ‘শনাক্ত’ (টিআই প্যারেড) করার জন্য ঈশিতার মা ও ভাইকে সংশোধনাগারে আনার কথা রয়েছে। ঈশিতার বাবা দুলাল মল্লিক বলেন, “আমিনিশ্চিত, ওরা অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারবে।”
নেপালে পালানোর ঠিক আগে, উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার বরিয়া গ্রাম থেকে রবিবার দেশরাজকে ধরে পুলিশ। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাকে কৃষ্ণনগর জেলা সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, এই সময়ের মধ্যে দেশরাজকে তেমন জেরা করা যায়নি। শনাক্তকরণ হলে, তাকে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে বিশদে জেরা করা হবে, ঘটনার পুনর্নির্মাণও হবে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আগেই আঙুলেরছাপ সংগ্রহ করেছে। দেশরাজকে হেফাজতে পাওয়ার পরে, তার আঙুলের ছাপ নিয়ে মিলিয়ে দেখার জন্য ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে। কৃষ্ণনগর পুলিশ-জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, “দেশরাজকে জেরা করার পরেই সবটা জানা যাবে।”
গত ২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ঢুকে মাথায় তিনটি গুলি করে খুন করা হয় বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিককে। পুলিশের দাবি, তাঁর মা আর স্কুলপড়ুয়া ভাইকেও খুন করতে চেয়েছিল দেশরাজ, কিন্তু পিস্তল থেকে গুলি বেরোয়নি। এর পরেই সে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে কৃষ্ণনগর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে। দেশরাজ তদন্তকারীদের জানিয়েছে, ট্রেন থেকে একটি সেতুর কাছে সে পিস্তল ফেলে দেয়। জায়গাটি চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। নিজের মোবাইলও সে বরাকর স্টেশনের কাছে ফেলে দিয়েছিল। তা উদ্ধার হয়েছে।
গত শনিবার কৃষ্ণনগর আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে রাজস্থানের জয়সলমেরে দেশরাজের বাবা, বিএসএফ জওয়ান রঘুবিন্দরপ্রতাপ সিংহকে ধরতে গিয়েছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পরোয়ানা জারি হতেই বিএসএফ তাকে গৃহবন্দি করেছে, কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া সেরে পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়নি। পুলিশের দাবি, দেশরাজকে পালাতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য তার বাবাই করেছেন এবং আগাগোড়া তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)