গঙ্গার অকাল ধসে বিপদ দেখছে ফরাক্কার মুস্কিনগর।
গ্রামের প্রাথমিক স্কুল থেকে পাঁচ মিটার দূরে পাড়ের এই ধস চিন্তায় ফেলেছে সেচ দফতরের কর্তাদেরকেও। চিন্তায় পড়েছেন গঙ্গাপাড়ের ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষও।
তবে আর্থিক সংকট টাকায় ভাঙন রোধে এখনই কিছু করতে পারছে না সেচ দফতর।
১৯৪২ সালে মুস্কিনগর প্রাথমিক স্কুলটি তৈরির সময় গঙ্গা ছিল বহু দূরে। নদী ভাঙতে ভাঙতে তা এখন স্কুলের দোরগড়ায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান জানান, বছর দুয়েক আগে গঙ্গার পাড় ভাঙতে শুরু করলে বালি বোঝাই বস্তা ফেলে সে যাত্রা ভাঙন কোনও ভাবে ঠেকানো হয়। তারপর থেকে আর ভাঙন দেখা যায়নি নদীতে। রবিবার সকালে গ্রামবাসীরা তাঁকে ফোন করে ভাঙনের কথা জানান। এসে দেখেন, স্কুলের অদূরে বইছে নদী।
তিনি বলেন, ‘‘এখন তা এতটাই বিপদজ্জনক যে সোমবার স্কুল খুললে ছেলেমেয়েরা খেলাধূলা করতে গিয়ে কোনও বিপদ না ঘটিয়ে বসে সেই আশঙ্কায় করছি।”
ফরাক্কা ব্যারাজ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবারই ফরাক্কায় “টিএসি”র (টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটি) একটি সভা হয়েছে। ওই কমিটিই মূলত ফরাক্কা ব্যারাজের যাবতীয় কাজের নীতি নির্ধারণ করার সর্বোচ্চ অধিকারী। সেখানে হাজির ছিলেন ফরাক্কা ব্যারাজের কর্তারা ছাড়াও রাজ্য সেচ দফতরের একাধিক রাজ্য পর্যায়ের পদস্থ কর্তা। সেই সভায় ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তারা রাজ্য সেচ দফতরের কর্তাদের স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন ফরাক্কা বাঁধ থেকে গঙ্গায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় ভাঙনের দায়িত্ব নেবেন তারা। সেই হিসেবে ফরাক্কার খোদাবন্দপুর মসজিদ এলাকা পর্যন্ত ভাঙনরোধে কাজ করতে রাজি ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। তার বাইরে বাকি ভাঙনের কাজ করতে হবে রাজ্য সরকারকে। ফলে মুস্কিনগরে গঙ্গা ধসের দায়িত্ব নিতে রাজি নয় ফরাক্কা ব্যারাজ।
গত চার দিনে প্রায় তিন মিটার জল কমেছে মুস্কিনগরের কাছে গঙ্গায়। ফলে সেখানে গঙ্গার জল পাড়ের উপর থেকে প্রায় ৩০ ফুট নীচে চলে গিয়েছে। আর জলের এই টানই পাড় ধসের মূল কারণ মনে করছে সেচ দফতর।
রাজ্য সেচ দফতরের রঘুনাথগঞ্জ ডিভিসনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উপর থেকে জলস্তর নীচে নামতে থাকায় কাদামাটির বালি বোঝাই বস্তার ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা বালি আলগা হয়ে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। বালুস্তর সরে গিয়েই এই ধস বিপর্যয়। তিনি বলেন, “অসময়ে এই ভাঙনে জরুরি ভিত্তিতে দেখা হয় না। সমীক্ষা করে প্ল্যান এস্টিমেট পাঠালে পরবর্তীতে রাজ্য সরকার তার অনুমোদন দিলে তবেই তার কাজ করা হয়। মুস্কিনগরের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে যা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।”