Advertisement
E-Paper

ক্লাসঘরে নীরব মোবাইল ফোন

ক্লাস চলাকালীন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করায় পঠনপাঠনে ক্ষতি হচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিভাবকরা। সপ্তাহ দুয়েক আগের এই ঘটনার পরে প্রধান শিক্ষক ক্লাসে মোবাইলে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

স্কুলের মধ্যে পড়ুয়াদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু ক্লাসঘরে শিক্ষকদের মোবাইল ব্যবহার কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই বিতর্কটা ঘুরপাক খাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এক কদম এগিয়ে প্রাথমিক স্কুলে ক্লাসঘরে মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বর্ধমান প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।

সেই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদেও। কিছু স্কুল ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞা জারিও করে ফেলেছে। বেশ কিছু এলাকায় ক্লাসে শিক্ষকের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার নিয়ে নালিশ ঠুকেছেন অভিভাবকরা। কচি পড়ুয়াদের পড়ানোর সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হচ্ছেন শিক্ষকরাও। দুই জেলাতেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে।

ক্লাস চলাকালীন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করায় পঠনপাঠনে ক্ষতি হচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিভাবকরা। সপ্তাহ দুয়েক আগের এই ঘটনার পরে প্রধান শিক্ষক ক্লাসে মোবাইলে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। নাকাশিপাড়ার ওই স্কুল শুধু নয়, নদিয়া-মুর্শিদাবাদের অনেক স্কুলেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

সম্প্রতি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ক্লাসঘরে মোবাইল ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার কিছুদিন পরেই এসকার আলি শেখ নামে রাজারহাট নিউটাউনের একটি হাইমাদ্রাসার এক শিক্ষক ফেসবুকে প্রশ্ন তোলেন, “ক্লাস চলাকালীন শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের কি দরকার আছে?” তিনশোর বেশি শিক্ষক সেখানে মতামত দিয়েছেন। তাঁদের সিংহভাগই এপ বিপক্ষে মত দিয়েছেন। কিছু কিছু শিক্ষক আবার লিখেছেন, ‘‘ছবি-ভিডিও সহকারে পড়ালে সেটা অনেক বেশি ফলপ্রসু হয়।’’ তবে সেখানে এত বিরুদ্ধ মত এসেছে যে, তাতে সেই যুক্তি কল্কে পায়নি। অভিভাবকদের অভিযেগ, পড়ুয়ারা কি করছে, সে দিকে অনেক সময় নজর থাকে না শিক্ষকদের। তাঁদের নজর স্মার্ট ফোনের পর্দায়।

কিছু শিক্ষক বলেছেন, প্রশাসন একাধিক হোয়াটস্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছে। সেই সব গ্রুপে বিভিন্ন তথ্য আপলোড করতে হয়। গোপালচন্দ্র দাস নামে এক শিক্ষক ফেসবুকে লিখেছেন – “গ্রামীণ এলাকার স্কুল। শিক্ষা সহায়ক সামগ্রীর অভাব রয়েছে। প্রয়োজনীয় ছবি, ভিডিও ডাউনলোড করে দেখায়। তাতে ফল ভাল হয়।” অভিভাবকদের পাল্টা যুক্তি, এ সবের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা, কিম্বা ফেসবুক-হোয়াটস‌্ অ্যাপের কোনও সম্পর্ক নেই।

নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলছেন, “বছর শুরুতেই আমরা স্কুলগুলিকে নোটিস দিয়ে বলেছি, ক্লাসে রুমে মোবাইল সাইলেন্ট করে রাখতে হবে। জরুরী হলে ক্লাসের বাইরে গিয়ে কথা বলতে হবে।” তিনি জানান, এই নির্দেশিকায় কাজ না হলে ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। এবিপিটিএর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক নবেন্দু সরকার বলছেন, “আমরাও চাই, ক্লাসঘরে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হোক।” তাঁর দাবি, সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে বর্ধমান। নদিয়ার এবিপিটিএর জেলা সম্পাদক অমিতাভ নাগও একই দাবি করেছেন।

Education Mobile Phone Primary School প্রাথমিক স্কুল বহরমপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy