E-Paper

জেলা পরিষদের বৈঠকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে নেতৃত্ব

জেলা পরিষদের পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ সভাগৃহে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:২২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বিরোধীদল তো বটেই, শাসকদলের সদস্যরা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে নানা ইস্যুতে বিঁধলেন। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে জেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির অনিয়মিত বৈঠক থেকে শুরু করে দরপত্রে দুর্নীতির অভিযোগ যেমন উঠেছে, তেমনই ধুঁকতে থাকা মুর্শিদাবাদ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (এমসিইটি) এবং জেলা পরিষদের অধীন থাকা আরএন টেগোর হাসপাতাল কেন বন্ধ রয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শাসক ও বিরোধীদলের জেলা পরিষদ সদস্যরা। এর মাঝে বিরোধী দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের বৈঠক থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ তোলা হয়েছে জেলা পরিষদের শিক্ষা দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখের বিরুদ্ধে। যদিও সফিউজ্জামান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ দিন জেলা পরিষদের পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ সভাগৃহে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে। সেখানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা, জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) মহম্মদ সামসুর রহমান, সহকারী সভাধিপতি আতিবুর রহমান-সহ অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন। সম্প্রতি জেলাশাসক জেলায় যোগদান করেছেন। তিনি জেলা পরিষদের নির্বাহী আধিকারিক। তাঁকে এ দিন জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তার পরে উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতির বৈঠক নিয়মিত হয়। আমরা জনপ্রতিনিধি, আমাদের দলের কাজেও যেতে হয়। প্রতিদিন জেলা পরিষদে আসা হয় না। তার মানে এই নয় আমরা বৈঠক করি না।’’

বৈঠক শেষে জেলা পরিষদের সিপিএমের সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কোটি কোটি টাকার উন্নয়নের ফিরিস্তি দেওয়া হয়েছে। অথচ জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলির বৈঠক অনিয়মিত হয়েছে। জেলা পরিষদের বৈঠকই যদি না হয় তা হলে সেই টাকা কীভাবে খরচ হল? জেলা পরিষদের কাজ হলে আমাদের ডাকা হয় না। এসব কথা এদিনের বৈঠকে বলেছিল।’’

জেলা পরিষদের কংগ্রেসের সদস্য আব্দুলাহিল কাফি বলেন, ‘‘এ দিন আমি বৈঠকে জেলার সমস্যরা কথা তুলে ধরছিলাম। তখন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ উঠে বলেন আপনাদের বৈঠক থেকে বের করে দেওয়া হয়নি ভাগ্য ভাল। এই কথা বলায় আমরা বিরোধী সদস্যরা প্রতিবাদ করেছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘জেলা পরিষদে দরপত্রেও দুর্নীতি করা হচ্ছে। জেলার এক বিধায়কের আত্মীয়ের জাল ক্রেডেনশিয়াল দেখিয়ে দরপত্র পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। আমরা প্রতিবাদ করে আটকাতে পেরেছি।’’

এ দিনের বৈঠকে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য শাহনাজ বেগম দল পরিচালিত জেলা পরিষদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। শাহনাজ বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলির বছরে চারটি করে বৈঠক করার কথা। সেখানে দু’বছরেও চার-পাঁচটি বৈঠক করেনি। শাহনাজ আরএন টেগোরের দ্রুত সমস্যা সমাধান করে চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তবে বৈঠক শেষে শাহনাজ বলেছেন, ‘‘বৈঠকের ভিতরের কথা সংবাদ মাধ্যমকে বলব না।’’

জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখ বলেন, ‘‘বিরোধী দলের যে কয়েক জন বন্ধু আছেন তাঁরা প্রত্যেক দিন বিরোধীতা করার জন্য আসেন। আমরা তাঁদের সম্মান দিই। আগের বৈঠকে জেলা পরিষদের বিরোধী দুই সদস্য ইউসুফ পাঠানকে পরিযায়ী সাংসদ বলেছিলেন। আমি তার প্রতিবাদ করেছিলাম। এ ভাবে একজন সাংসদকে পরিযায়ী বলতে পারে না। সমস্ত জায়গায় বিরোধীরা সমান সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। আমি ওদের বের করার কথা বলিনি। আমি ওদের বলেছি আপনারা যে এত বিরোধীতা করেন, আপনাদেরকে কেউ এই ঘর থেকে কেউ বের করে দেয় কোনও দিন?’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berhampore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy