কৃষ্ণনগরের পরে প্লাস্টিক রুখতে ঝাঁপাল নবদ্বীপও। সোমবার সকালে আচমকা অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হল বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক।
একে সপ্তাহের প্রথম দিন। চলছে অন্নকূট, শিয়রে ভাইফোঁটা। নবদ্বীপের বড়বাজারে থিকথিক করছে লোক। বাজারের মোড়ে একফালি দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালেন নিরীহ চেহারার এক ক্রেতা। মূলত প্লাস্টিকের নানা জিনিস বিক্রি হয় ওই দোকান থেকে। প্লাস্টিকের কী-কী ধরনের ব্যাগ আছে, দাম কত ইত্যাদি নিয়ে দোকানির সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করলেন ভদ্রলোক। বড় খরিদ্দার ভেবে দোকানদার তাঁর মজুত থেকে নানা জিনিস বার করে দেখাতে লাগলেন। জানালেন, লাগলে আরও আনিয়ে দিতে পারবেন।
ভদ্রলোক বললেন, “না, দোকানে আর এ সব জিনিস আনবেন না বা বিক্রি করবেন না। পুরসভার তরফে এটা আপনাদের কাছে অনুরোধ।” হুঁশ ফিরতেই কারবারি দেখেন, দোকানের সামনে হাজির একদল পুরকর্মী। সঙ্গে পুরসভার গাড়ি। হাজার দশেক টাকার নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করে তাঁরা ঢুকে পড়লেন বড়বাজারের মধ্যে।
গত সপ্তাহেই পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্লাস্টিক নির্মূল অভিযান দ্রুত শুরু করা হবে। পুরসভার একজ়িকিউটিভ অফিসার অমিতাভ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে প্রথমে বড়বাজারে ঘুরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বা অন্য জিনিস ব্যবহার না করতে অনুরোধ করা হয়। এর পরে শুরু হয় প্লাস্টিক পাইকারদের দোকানে হানা। ইতিমধ্যে প্লাস্টিক নিয়ে চতুর্দিকে হইচই শুরু হওয়ায় বেশির ভাগ দোকানেই অল্প জিনিস ছিল। কিন্তু পাইকারদের গুদামে হানা দিয়ে চোখ কপালে ওঠে পুরকর্মীদের। দেখা যায়, মজুত রয়েছে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক ও থার্মোকলের নিষিদ্ধ সামগ্রী। তার মধ্যে আছে নানা ধরনের ক্যারিব্যাগ, থার্মোকলের থালা-বাটি-গ্লাস, প্লাস্টিক চায়ের কাপ, গ্লাস ইত্যাদি। দিনভর অভিযান চলে বড়বাজার, বড়ালঘাট, পোড়াঘাট, ব্যানার্জিপাড়া, তেলিপাড়া, পোড়ামাতলা এলাকায়।
নবদ্বীপ পুরসভার একজ়িকিউটিভ অফিসার বলেন, “একটি ভ্যানগাড়ি এবং পাঁচ ট্রাক্টর বোঝাই জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আনুমানিক বাজারমূল্য সাত-আট লক্ষ টাকা।”
পুরপ্রধান বলেন, “আমরা নবদ্বীপকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর। তবে শুধু পুরসভা বা প্রশাসনের চেষ্টায় হবে না। নাগরিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। অভিযান চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy