Advertisement
E-Paper

হাঁটু সমান জলে নাজেহাল দশা

এক পশলা বৃষ্টি হলেই হাঁটু জল। যার মেয়াদ অন্তত মাস খানেক। এমনই দশা রানিনগরের কাতলামরি-১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি গ্রামের রাস্তার। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধার কথা ভেবে শেখপাড়া মোড় থেকে নবীপুর মোড় পর্যন্ত (ভায়া কাহারপাড়া-কাতলামারি হাট- মোহনগঞ্জ) পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পিচ-পাথরের রাস্তা নির্মাণ করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৬ ০১:৩২
বেহাল নিকাশি। কাতলামারির রামনগরপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

বেহাল নিকাশি। কাতলামারির রামনগরপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

এক পশলা বৃষ্টি হলেই হাঁটু জল। যার মেয়াদ অন্তত মাস খানেক। এমনই দশা রানিনগরের কাতলামরি-১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি গ্রামের রাস্তার। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধার কথা ভেবে শেখপাড়া মোড় থেকে নবীপুর মোড় পর্যন্ত (ভায়া কাহারপাড়া-কাতলামারি হাট- মোহনগঞ্জ) পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পিচ-পাথরের রাস্তা নির্মাণ করা হয়। বছর দশেক আগে। জল জমায় সেই রাস্তাই যেন কাল হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

কাতলামারি হাট থেকে শুরু করে রামনগরপাড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি এলাকায় এক পশলা বৃষ্টি হলে হাঁটুজল জমে যায়। এবং তা স্থায়ী হয় অন্তত এক মাস। ফলে পুরো বর্ষাকাল জলমগ্ন থাকে এই এলাকা। ওই রাস্তা লাগোয়া এলাকাতেই তিন জন পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি। ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় আমজনতা থেকে প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। হাঁটুজল পেরিয়ে যেতে হয় পঞ্চায়েত ভবনে। তবুও সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে।

কাতলামারি-১ পঞ্চায়েতের কাতলামারি হাটের কাছে বাড়ি পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের কাদের বক্সের, মাস্টারপাড়ায় থাকেন কংগ্রেসের আমিনুল ইসলাম বাদশা ও কাতলামারি-২ পঞ্চায়েতের রামনগরপাড়ায় বাড়ি সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ফিনদোরা বিবির। পঞ্চায়েতের ওই তিন সদস্যের বাড়ির সামনেই দেড় কিলোমিটার রাস্তায় হাঁটুজল। কোনও এককালে সেখানে অসম্পূর্ণ নিকাশিনালা ছিল। সে সব কবেই উধাও।

ফিনদোরা বিবির স্বামী আজাবুল শেখ বলেন, ‘‘একপশলা বৃষ্টি হলেই এক মাস হাঁটু জলে ভাসে রাস্তা। ফলে স্কুল-কলেজ, হাটে-বাজারে যাওয়া যায় না। সেই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে গত বছর পাম্প মেশিন ভাড়া করে জল তুলতে হয়েছিল।’’ মাস্টারপাড়ার ৫৮ বছরের প্রৌঢ়া প্রভাতী মণ্ডল চার কিলোমিটার দূরে নবীপুর সরলা হাইস্কুলের অশিক্ষক কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘জলমগ্ন ওই রাস্তা দিয়ে সাইকেলে চেপে স্কুল যেতে হামেশাই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।’’

প্রভাতীদেবীর প্রতিবেশী অতীন সরকার সর্বশিক্ষা অভিযানের কর্মী। অতীনবাবু বলেন, ‘‘মোটরবাইকে করে যাওয়ার সময় জল ছিটকে পথচারীর গায়ে লাগে। কিন্তু করার থাকে না।’’

রাস্তার দু’ধারের বাড়িগুলি উঁচু। সেই সাপেক্ষে রাস্তা বেশ নীচু। এক সময় নীচু রাস্তার জল নিকাশির জন্য নালা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গৃহস্থের আবর্জনায় ভরে গিয়েছে সেই নালা। মাস্টারপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় একাধিক নিকাশি নালা তৈরি হয়েছিল। এখন সে সবের অস্তিত্ব নেই। তবে নতুন করে উন্নত নিকাশি নালা তৈরি করা হবে।’’

ওই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতই রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। কাতলামারি-১ পঞ্চায়েতের প্রধান রুহুল আমিন ও কাতলামারি-২ পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ মোল্লা—দু’জন নিকাশী ব্যবস্থা নিয়ে একই কথা বলছেন।

তাঁরা বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক থেকে রাজ্য সরকার গ্রাম পঞ্চায়েতকে কোনও টাকা দেয়নি। এ কারণে অর্থাভাবে নিকাশি নালা বানাতে পারছি না।’’ দলবদলের ফলে রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতি বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘কাতলামারি এলাকার নিকাশি সমস্যার কথা আমাকে কেউ জানাননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’

water-logging Rain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy