Advertisement
E-Paper

করোনা ভীতি কাটেনি, রেস্তরাঁও ফাঁকাই

কার্যত মাছি তাড়ানোর অবস্থায় কর্মীদের দেখা গিয়েছে বহু জায়গায়।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৩:০৯
লকডাউন ওঠায় খুলেছে রেস্তরাঁ। ফিভার গান দিয়ে মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। সঙ্গে থাকছে দূরত্ববিধি। কৃষ্ণনগরে মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

লকডাউন ওঠায় খুলেছে রেস্তরাঁ। ফিভার গান দিয়ে মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। সঙ্গে থাকছে দূরত্ববিধি। কৃষ্ণনগরে মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

হোটেল খোলার অনুমতি পাওয়া গেলেও জেলা জুড়ে তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ লোকসানের ভয়ে, কেউ আবার কর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোনও কোনও রেস্তরাঁ খোলেননি। কোনও কোনও রেস্তরাঁ আবার ঝুঁকি নিয়েও পুরোদমে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। তবে হোটেল বা রেস্তরাঁ খোলা হলেও সে ভাবে খরিদ্দারের দেখা মেলেনি এ দিন। কার্যত মাছি তাড়ানোর অবস্থায় কর্মীদের দেখা গিয়েছে বহু জায়গায়।

সোমবার থেকে রেস্তরাঁ খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও কৃষ্ণনগর শহরের পাত্রবাজার এলাকার একটি নামী ও শহরের পুরনো রেস্তরাঁ খোলা হয়নি। কারণ, হিসাবে কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা কোনও রকম ভাবে ঝুঁকি নিতে চাননি। রেস্তরাঁর অন্যতম মালিক সঞ্জয় চাকি বলছেন, “অনেক মানুষ আছেন যাঁরা উপসর্গবিহীন ভাবে ভাইরাস আক্রান্ত। ফলে কোনও ভাবেই বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয় যে কে আক্রান্ত আর কে নন।”

তিনি আরও বলেন, “যখন বাইরে থেকে লোক ঢুকছে, আমরা কাউকেই আটকাতে পারব না। আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাই ব্যবসা বন্ধ রাখছি।” পাশাপাশি তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন যে, হোম ডেলিভারিতে মানুষ উৎসাহ দেখালেও হোটেল-রেস্তরাঁয় এসে, বসে খাওয়ার বিষয়ে এখনও মানুষ কতটা উৎসাহ দেখাবেন, সেটা নিয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। ফলে, আদৌ ব্যবসার খরচ উঠবে কিনা, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কোনও ভাবেই তাই হোটেল-রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ দোকান খুলে লোকসান করতে রাজি নন।

আবার, কৃষ্ণনগর শহরের চ্যালেঞ্জ মোড় এলাকার একটি নামী রেস্তরাঁ যেমন সোমবার থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ঢোকার মুখে ফিভার গান দিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে টেবিল। প্রতিটি টেবিলে দুটো করে চেয়ার রেখে মুখোমুখি বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একজন ক্রেতা খেয়ে চলে যাওয়ার পর টেবিল স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। টেবিল-বয় মাস্ক ও গ্লাভস পরে থাকছেন। রেস্তরাঁটির মালিক সিলভি সাহা বলেন, “রেস্তরাঁ খোলার পর থেকে মোটামুটি সাড়া পাচ্ছি। আমাদের এখানে সরকারি নির্দেশিকা মেনে সমস্ত রকম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

রানাঘাট শহররে পশ্চিম পাড়ে একটি বিরিয়ানির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বছর আঠারোর এক করেল পড়ুয়া তাঁর বান্ধবীকে খাওয়াতে পারলেন না এ দিন। এই একই ছবি জেলার বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে। আবার অন্য দিকে, হোটেল-রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও সে ভাবে মানুষের ভিড় চোখে পড়েনি।

মঙ্গলবার রানাঘাট, চাকদহ, শিমুরালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় খাবারের হোটেল খুলতে দেখা গিয়েছে। এক হোটেলের মালিক বলেন, “ডাল, ভাত, তরকারি, ভাজা এবং মাছের ঝোল রান্না করেছি। তা-ও কেউ খেতে আসছেন না। দু’-চার জন দোকান থেকে খাবার কিনে নিয়ে গিয়েছেন।’’

রানাঘাটের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা পিন্টু সরকার বলেন, “বেশ কয়েকটি হোটেল খুললেও সে ভাবে মানুষ আসেননি। এর জন্য, বিভিন্ন কারণ রয়েছে। রানাঘাট মহকুমা শহর। সেই কারণে বিভিন্ন জায়গা থেকে এই শহরে লোক আসে। এখন ট্রেন চলাচল করছে না। বাস সে ভাবে চলছে না। যে কারণে বাইরের লোকজন আসছে না। এছাড়াও, মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। কেউ সাহস করে হোটেলের খাবার খাচ্ছেন না। তার পর শহরে দু’জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সেই আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে।”

প্রায় একই অবস্থা শান্তিপুর এলাকায়। সেখানে মূলত রাস্তার পাশে ছোটখাট হোটেল খোলা হলেও সে ভাবে দেখা মেলেনি খরিদ্দারের। মালিকেরা জানাচ্ছেন, কার্যত মাছি তাড়ানোর মতো অবস্থা। হোটেল চালানোর খরচই উঠছে না তাঁদের।

Coronavirus Health Covid-19 Unlock 1.0
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy