করোনার সময় একে একে বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। — ফাইল চিত্র।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সাগরদিঘিতে বিপুল সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্ভাব্য অনুপস্থিতি চিন্তা বাড়াচ্ছে তৃণমূল ও কংগ্রেসের। কারণ দুই দলই নিশ্চিত এ বারের উপনির্বাচনে ভোটের হার যেমন কমবে, হার জিতের ব্যবধানও কমবে।
বাড়ালার বৃদ্ধা সামিমা বেওয়ার দুই ছেলেই গিয়েছে নাগাল্যাণ্ডে রাজমিস্ত্রির কাজে। তাঁর কথায়, “গ্রামের পার্টির লোকেরা এসে বলে গিয়েছে ছেলেদের খবর পাঠাও, ভোটের আগের দিন যেন গ্রামে চলে আসে তারা। ছেলেরা বলেছে নাগাল্যান্ড থেকে আসতে যেতে ৪ দিন। খরচও ৪ হাজার টাকারও বেশি। তাই পারবে না ভোট দিতে।”মনিগ্রামের মরিয়ম বিবির স্বামী কংগ্রেসের কট্টর সমর্থক। মরিয়ম বলছেন, “কাজে গেলেও প্রতিবারই যত কষ্টই হোক ভোটটা দিতে আসে। কিন্তু এবারের ভোটের দিন ক্ষণ ঠিক ছিল না। কদিন পরেই পঞ্চায়েত ভোট। এ বারে ভোটে তাই স্বামীর ওড়িশা থেকে আসা হচ্ছে না।”কাবিলপুরের মুজিবর শেখের দুই ছেলেই রাজমিস্ত্রির কাজে কেরলে আছে। বাবার কথা, “রোজই একবার করে সব পার্টির লোকেরা আসছে। ছেলের মোবাইল নম্বরও নিয়ে গিয়েছে তারা। তবে ছেলেরা জানিয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ। তাই এবারে আসা হবে না।”
সাগরদিঘিতে বিধানসভার উপ নির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি। হাতে মাত্র তিনটি দিন। সাগরদিঘির ১১টি অঞ্চল জুড়ে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটার এলাকা ছাড়া, ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে। কেউ গিয়েছেন রাজমিস্ত্রির কাজে, কেউ বা জিনিস ফেরির কাজে। আর বিপুল সংখ্যক ভোটারের এই অনুপস্থিতি রীতিমত চিন্তায় ফেলেছে জেলার সব রাজনৈতিক দলকেই। ৬৫ শতাংশেরও বেশি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাগরদিঘিতে এবারে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে। বিজেপিরও দাবি, লড়াইয়ে আছে তারাও।
২০২১ সালে সাধারণ নির্বাচনে সাগরদিঘিতে ভোট পড়েছিল ৭৮.৮৬ শতাংশ। এ বার বিপুল সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে থাকা তাই চিন্তার। ভোট পড়ার হার ৭৫ শতাংশেরও নীচে নেমে আসবে এই আশঙ্কা সব দলেরই।কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “আমাদের হিসেবে সাগরদিঘি থেকে ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক বাইরে গিয়েছে। মতদানের অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হল এটাই দুঃখজনক।” তৃণমূলের জঙ্গিপুরের সভাপতি খলিলুর রহমানও বলছেন, “কোন দলের কত সমর্থক বাইরে রয়েছেন, সেটা তো বোঝা শক্ত। তবে আমরা আমাদের প্রত্যেক কর্মী ও সমর্থকদের বলছি যারা এ রাজ্যেই বা পড়শি রাজ্যে রয়েছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy