Advertisement
E-Paper

কয়েন নিচ্ছে না ব্যাঙ্ক, শিকেয় উঠছে ব্যবসা

দিচ্ছি কিন্তু নিচ্ছি না! দশ টাকার কয়েন নিয়ে দুই জেলার বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এমন মনোভাবে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০২

দিচ্ছি কিন্তু নিচ্ছি না!

দশ টাকার কয়েন নিয়ে দুই জেলার বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এমন মনোভাবে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে এই সমস্যা নিয়ে জেলাশাসক ও সভাধিপতির কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও খুচরো ঝামেলা মেটেনি।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক অবাধে দশ টাকার কয়েন দিচ্ছে। কিন্তু সেই কয়েনই ব্যাঙ্কে জমা দিতে গেলে নানা অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে তো ব্যবসা শিকেয় উঠবে। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কয়েন সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে তাঁরা বাধ্য হবেন আন্দোলনের পথে যেতে।

করিমপুর থেকে কল্যাণী, নবদ্বীপ থেকে নওদা কিংবা জলঙ্গি থেকে জঙ্গিপুর ভোগান্তির এই ছবিটা কমবেশি সর্বত্র একই রকম। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা জানান, কয়েন দেব, কিন্তু নেব না— এই অবাস্তব সিদ্ধান্তের পিছনে ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্যটা ঠিক কী তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। ব্যাঙ্ক–বাজার–ব্যবসায়ী, সম্পর্কটা তো একটা ত্রিভুজের মতো। ব্যাঙ্ক টাকা দেবে। ক্রেতার হাত ঘুরে সেই টাকা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ফের ব্যাঙ্কে যাবে। এ ভাবেই তো চলে আসছে। এখন ব্যাঙ্কই যদি তার দেওয়া কয়েন ফেরত না নেয় তাহলে তো গোটা ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে।

কালীগঞ্জের মীরাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী সম্পাদক শ্রীমন্ত কুণ্ডু জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তো বলেই দিয়েছে দশ টাকার কয়েন নিয়ে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। সেই মতো ব্যাঙ্ক থেকেও সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছ থেকে নিচ্ছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক সেই টাকা নেওয়া বন্ধ করাতে খুব সমস্যা হচ্ছে।

নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলছেন, ‘‘নবদ্বীপের রাজার বাজারের দৈনিক যে খাজনা সংগ্রহ করা হয়, তা এখন কয়েনের দাপটে টিনের বাক্সে রাখতে হচ্ছে। আমার নিজের প্রতিষ্ঠানে শনিবার এক ক্রেতা আট হাজার টাকার কয়েন দিয়েছেন। এবং আমাকে সেই কয়েন নিতে হয়েছে। এ বার ওই কয়েন নিয়ে আমি কোথায় যাব?’’

বেলডাঙা বেগুনবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী মন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখন যা অবস্থা তাতে ক্রেতাদের থেকে দশ টাকার কয়েন নিতেই তো ভয় লাগছে। ব্যাঙ্কই বলছে, দশ টাকার কয়েন নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই। আবার তারাই নিচ্ছে না। এমন দ্বিচারিতার মানে কী?’’

ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রিজিওনাল ম্যানেজার প্রদীপকুমার মিশ্র বলছেন, ‘‘ব্যাঙ্কের দশ টাকার কয়েন জমা না নেওয়ার তো কোনও কারণ নেই। কেন এমন হচ্ছে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মুর্শিদাবাদের লিড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা অমিত সিংহ বলছেন, ‘‘খুচরো টাকা আমরাও জমা নিই। তবে কর্মী সঙ্কটের কারণে এই মুহূর্তে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমরা মূলত খুচরো বাজারকে চাঙ্গা রাখতেই ব্যাঙ্ক থেকে কয়েন ছেড়েছি।’’ নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণী রায় বলেন, “কয়েন সমস্যা নিয়ে জেলার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পেয়েছি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক আছে। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’’

Bank 10 Rs Coins Refusal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy