কারও চাষ মার খেয়েছে, কারও বা ফসলের দর না পাওয়ায় হাতে টাকা নেই। ফলে, কিসান ক্রেডি়ট কার্ডে নেওয়া ঋণের টাকা তাঁরা শোধ করতে পারছেন না। কিন্তু চাষিদের একটা বড় অংশ আছেন যাঁদের ধারণা হয়েছে, ঋণ শোধ না করলে সরকার তা মকুব করে দেবে। তাঁরা তাই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। এবং ঋণশোধ না করার জেরে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে বহু কিসান ক্রেডিট কার্ড।
মুর্শিদাবাদে ৫ লক্ষ ৯৯ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। প্রায় ৫ লক্ষ ৯৩ হাজার পরিবারকে কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ ৮৩ হাজার কার্ড নিষ্ক্রিয়। নদিয়ায় ৪ লক্ষ ২৪ হাজার কৃষক পরিবারের ৯৯ শতাংশকেই কার্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লাখখানেক কার্ড নিষ্ক্রিয়। প্রশাসন সূত্রের ব্যাখ্যা, ঋণ নিয়ে শোধ না করায় কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়েছে। আবার ঋণ না নেওয়ার কারণে অনেকের কার্ড সক্রিয় হয়নি।
সম্প্রতি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া কার্ডগুলিকে সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর। তাদের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাজ্যের সব জেলায় কিসান ক্রেডিট কার্ড দিবস পালন করা হয়েছে। নদিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) রঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “নিষ্ক্রিয় কার্ড সক্রিয় করতে এবং নতুন কার্ড দিতে জুন-জুলাই দু’মাসে চার দিন কিসান ক্রেডিট কার্ড দিবস পালন করছি। গত ৮ জুন হয়েছে, এ দিন ফের হল।’’ মুর্শিদাবাদের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুণ্ডু বলেন, “নানা কারণে জেলায় প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার কিসান ক্রেডিট কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। সেগুলি সক্রিয় করার চেষ্টা চলছে।”
ঋণ শোধ না করা নিয়ে কী বলছেন চাষিরা?
করিমপুরে মধুগাড়ির মফিজুল মণ্ডল বলেন, “ঝড়বৃষ্টির জেরে কলা চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই ঋণ শোধ করতে পারিনি।” ডোমকলে ইসলামটুলির সফিকুল আলম (তাঁর নিজের কিসান ক্রেডিট কার্ড সক্রিয় আছে) আবার বলেন, “অনেক চাষির ধারণা হয়েছে, কৃষিঋণ কোনও না কোনও সময়ে সরকার মকুব করে দেয়। সেই ধারণা থেকেই অনেকে ঋণ শোধ করে না।”
নদিয়ার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সুগত লাহিড়ীও বলেন, “কৃষিঋণ মকুব হযে যাবে, এমন ভূল বুঝে অনেক টাকা শোধ করছেন না। বহু ক্ষেত্রেই কিসান ক্রেডিট কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার এটা অন্যতম কারণ।” তাঁর দাবি, জেলা প্রশাসনের কর্মীদের সঙ্গে যৌথ ভাবে গ্রামে-গ্রামে গিয়ে ঋণ শোধ করার ব্যাপারে তাঁরা চাষিদের সচেতন করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy