হাজার চেষ্টা করেও চোখের জল শুকোচ্ছে না কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত নৈমুদ্দিন শেখের পরিবারের সদস্যদের। নিজস্ব চিত্র।
ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দশ দিন। আপ্রাণ ছন্দে ফিরতে চাইছে সাগরদিঘির প্রান্তিক গ্রাম বাহালনগর। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও চোখের জল শুকোচ্ছে না কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত নৈমুদ্দিন শেখের পরিবারের সদস্যদের। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টাতেও রান্না চড়েনি বাড়ির উনুনে। নৈমুদ্দিনের বড় ছেলে লালচাঁদ শেখ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কেরলে গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রির কাজে। বাবার মৃত্যুসংবাদ শুনে ফিরে এসেছেন গ্রামে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া দুই ভাইবোন মানিকচাঁদ ও নেসবান খাতুন এ দিন মুড়ি খেয়েই স্কুলে গিয়েছে।
নৈমুদ্দিনের স্ত্রী আবেদা বিবি বলছেন, “কখনও ভাবিনি এমন দিনও আসতে পারে আমাদের জীবনে। ১৮ বছর ধরে কাশ্মীরে আপেল বাগানে কাজে করছিল স্বামী। কথা ছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হলেই সে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু তার আগেই বাড়ি এল কফিনে বন্দি হয়ে।’’ ঘটনার পরেই মন্ত্রীর হাত থেকে মিলেছিল পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক আর নগদ ২ লক্ষ টাকা। সেই চেক ও টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। সেই টাকা দিয়েই কোনও রকমে চলছে সংসার। আবেদা বলছেন, ‘‘মানুষটা ফিরে এল, কিন্তু ধান পড়ে রইল মাঠেই। এই টাকা তো এ ভাবেই ফুরিয়ে যাবে। তার পরে কী হবে?’’
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে গ্রাম ঢুকেই কয়েকটি বাড়ি পেরিয়েই টিনের চালা দেওয়া মাটির বাড়ি। ঘটনার পরে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তারা সেই বাড়িতে এসেছেন। পরিবারের আর্থিক সমস্যা মেটাতে বিকল্প কোনও কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু ওইটুকুই!
আবেদা বলছেন, “এখনও পর্যন্ত কিছু আয়ের সংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা হয়নি পরিবারের কারও। শেষকৃত্যের পরে আর প্রশাসনের লোকজনও খোঁজ নেননি। বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে দিনমজুরি খাটে। একটা কাজের ব্যবস্থা হলে হয়তো
ডাল ভাত খেয়ে কোনও রকমে বেঁচে যেতাম। মানুষটা বেঁচে থাকলে কি আর এমন দিন দেখতে হত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy