Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik and HCS: ক’দিন ক্লাস হয়ে টেস্ট, নাস্তানাবুদ পরীক্ষার্থীরা

যেহেতু প্রশ্ন তৈরি করছে স্কুল নিজেই, তাই যতটা সিলেবাস শেষ করা যাবে, তার মধ্যেই কি প্রশ্ন করা হতে পারে বলে আশায় পরীক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা নিয়ে অসন্তোষ। বৃহস্পতিবার লেডি কারমাইকেল বালিকা বিদ্যালয়ে।

পরীক্ষা নিয়ে অসন্তোষ। বৃহস্পতিবার লেডি কারমাইকেল বালিকা বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কৃষ্ণনগর ও তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১৫
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট ৮০ নম্বরের পরিবর্তে ৪০ নম্বরে নেওয়ার দাবিতে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাল বেশ কিছু পরীক্ষার্থী। তারা প্রথমে অন্য পরীক্ষার্থীদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয়। সেই বাধা অগ্রাহ্য করে তারা পরীক্ষা দিতে ঢুকলে সেখান থেকেও তাদের জোর করে বার করে আনার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে অবশ্য সকলেই পরীক্ষা দিয়েছে বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগরের লেডি কারমাইকেল গার্লস হাই স্কুলে। বুধবার, ১ ডিসেম্বর থেকে এই স্কুলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রথম দিকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ টেস্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। কিন্তু তাঁরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য ১০০ নম্বরের টেস্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয়, তার মধ্যে ৮০ নম্বর লেখা পরীক্ষা হবে। বুধবার বাংলা পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে মঙ্গলবার সংসদ উচ্চ মাধ্যমিকে টেস্ট বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে বলে। সে ক্ষেত্রে ৪০ নম্বর লেখা পরীক্ষা হবে।

বিষয়টি জানাজানি হতেই স্কুলের কয়েক জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১০০ নম্বরের টেস্ট দিতে অস্বীকার করে। তাদের বক্তব্য, মাত্র ক’দিন আগে স্কুল খুলেছে। তাদের পক্ষে তেমন প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পাপিয়া বর্মণ বলছেন, “আমাদের প্রশ্নপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই ৪০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

তাদের অধীনস্থ সমস্ত স্কুলকে ১৩ থেকে ২৪ শে ডিসেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিকের টেস্ট নেওয়ার নির্দেশিকা দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আবার সংসদ জানিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট শেষ করে ফেলতে হবে। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে ১০ নম্বরের প্রজেক্ট বাদ দিয়ে ৯০ নম্বরে এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রত্যেকটি স্কুল নিজে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবে।

সমস্যা হল, লেডি কারমাইকেল গার্লসের মতো জেলাসদরের স্কুলেই যেখানে পরীক্ষার্থীরা অপ্রস্তুত, প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরপ কী দশা হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। বহু ছাত্রছাত্রীই ঠিক মতো অনলাইন ক্লাস করতে পারেনি। স্কুল খোলার পর এত কম সময়ে সিলেবাস শেষ করা তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার বহু গ্রামীণ স্কুলের পড়ুয়ারাই জানাচ্ছে, নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে তারা অনলাইন ক্লাস প্রায় করতে পারেনি। সদ্য স্কুল খোলার পরেও সপ্তাহে তিন দিন ভাগাভাগি করে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু স্কুলে সিলেবাসের অর্ধেকও সম্পূর্ণ হয়নি।

তেহট্টের গ্রামীণ স্কুল নিমতলা বিদ্যানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, “নির্দেশ মতো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের সময়সূচি দেওয়া হয়েছে। তবে সিলেবাস শেষ করা বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। আমরা দেখছি, কী করা যায়।” বেতাই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রজত সরকারও বলছেন, “টেস্টের সময়সূচি দেওয়া হয়েছে ঠিকই, তবে সীমান্তবর্তী এলাকার পড়ুয়ারা সিলেবাস কতটা শেষ করতে পারবে, সেটা চিন্তার।” শ্রীদামচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে এখন আবার কোনও বাংলার শিক্ষকই নেই। সেই সঙ্গে আরও নানা সমস্যা রয়েছে। যে কারণে প্রধান শিক্ষকের কাছে পরীক্ষা পিছোনোর আর্জি জানিয়েছে পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষক লিলি হালদার বলেন, “টেস্টের সময়সূচি দেওয়া হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের আবেদন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

তবে যেহেতু প্রশ্ন তৈরি করছে স্কুল নিজেই, তাই যতটা সিলেবাস শেষ করা যাবে, তার মধ্যেই কি প্রশ্ন করা হতে পারে বলে আশায় পরীক্ষার্থীরা। তবে প্রধান শিক্ষকেরা বলছেন, এমনিতেই পর্ষদ সিলেবাস অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। তার উপরেই প্রশ্ন হবে এবং তা পর্ষদকে পাঠাতে হবে। নদিয়া জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক দেবাশিস সরকার বলছেন, “নির্দেশিকা যখন এসেছে, মানিয়ে নিতে হবে। এখন অসুবিধা থাকবে ঠিকই, তবে আসল পরীক্ষার ব্যাপারে পরীক্ষার্থীরা অভিজ্ঞ হয়ে উঠবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE