প্রতীকী ছবি।
জেলায় অবজার্ভার পদ বিলুপ্ত হয়ে কো-অর্ডিনেটর পদ তৈরি হতেই ব্লকে ব্লকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন সম্ভাব্য সভাপতিদের নাম। প্রায় রোজই শোনা যাচ্ছে, রাজ্য স্তর থেকে জেলা ও ব্লক স্তরের কমিটির নাম ঘোষণা হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। আর তাতেই জটিলতা চরমে উঠেছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। কেবল জেলা স্তরে নয়, শাসক দলের অন্দরেরই খবর, ব্লক থেকে একেবারে নিচু স্তরেও আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হয়ে গেছে তৃণমূলের সংগঠন।
কোথাও সম্ভাবনাময় সভাপতির পিছনে দৌড়চ্ছে একটা অংশ আবার সাবেক সভাপতির সঙ্গেও আরও একটা অংশ। আর মাঝে মাঝেই এই দু’পক্ষের লড়াই একেবারে সামনাসামনি চলে আসছে। এমনকি মিছিল পাল্টা মিছিলও করছে একে অপরের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, তৃণমূলের জন্মের পর থেকে এমন সাংগঠনিক সমস্যায় ভুগতে হয়নি জেলা তৃণমূলকে। প্রতিটি ব্লক থেকে অঞ্চল পর্যায়ে দ্বিধাবিভক্ত দল। তা ছাড়া, জেলা কমিটি গঠন এবং সভাপতির বদল না হওয়ায় হতাশায় ভুগছে নিচুতলার কর্মী সমর্থকদের একাংশ। তাদের দাবি, অন্য দল যখন ঘর গোছাচ্ছে নির্বাচনকে সামনে রেখে, তৃণমূলে তখন চলছে ঘর ভাঙার খেলা।
রানিনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং তৃনমূলের সভাপতির পদে আছেন আমিনুল হাসান। জেলায় কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব সৌমিক হোসেন আসার পর থেকেই সেখানে নতুন করে উঠে এসেছে সভাপতি হিসেবে জেলা পরিষদের সদস্যের স্বামী জাকারিয়া হোসেন এর নাম। সংগঠনের দাবি, আর তারপর থেকেই তৃণমূল দ্বিখণ্ডিত রানিনগর ১ ব্লকে। আমিনুল হাসানের বিক্ষুব্ধ একটা অংশ ভিড়ে যায় সৌমিক ঘনিষ্ঠ জাকারিয়ার শিবিরে। অন্য দিকে দক্ষ সংগঠক আমিনুল হাসান ঘর গোছাতে শুরু করে তার দলবল নিয়ে। ফলে একটা সময় সৌমিকের বিরুদ্ধে একেবারে স্লোগান দিয়ে পথে নেমে পড়ে আমিনুল হাসান ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের কর্মীরা। দিন কয়েক পরে নিজেদের শক্তির জানান দিতে জাকারিয়ার দলবল নেমে পড়েন মাঠে। আর এ ভাবেই রানিনগর ১ ব্লকে তৃণমূল এখন আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত। যদিও আমিনুল হাসানের দাবি, ‘‘আদতে তৃণমূল নয়, সিপিএম এবং কংগ্রেস কিছু লোকজনকে নিয়ে সৌমিক হোসেন তৃণমূলকে ভাঙাতে পথে নেমেছে। তার অনেক আগেই রাজনীতিতে এসেছি তৃণমূলেও এসেছি। ওর কাছ থেকে শেখার কিছু নেই। এভাবে সভাপতির নাম ভাসিয়ে দিয়ে আখের দলেরই বড় ক্ষতি করা হচ্ছে।’’ সৌমিক হোসেন এসবে আমল দিতে নারাজ। তার কথায়, ‘‘ব্লকের সভাপতি কে হবেন, সেটা দল ঠিক করবে দল। আমরা কারও নাম ভাসিয়ে দিইনি। আর আমার হাত ধরে যদি কংগ্রেস সিপিএম দলে আসে তাহলে সেটা তো তৃণমূলের লাভ। হিংসের কিছু নেই। এই পরিস্থিতি খুব কম সময়ের মধ্যেই মিটে যাবে।’’
কেবল রানিনগর নয়, জেলার লালগোলা ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শুভরঞ্জন রায়ের জায়গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা পরিষদ সদস্য রুমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। ভগবানগোলা ব্লকে তৃণমূলের আফরোজ সরকারের জায়গায় ভাসানো হয়েছে কামাল হোসেনের নাম। আর জিয়াগঞ্জে দেবাশিস সাহার বদলে হাওয়ায় ভাসছে অরুণ সাহার নাম। জলঙ্গির একটা অংশে ভেসে উঠছে জেলা পরিষদের সদস্য নবকুমার সাহার নাম। ফলে জেলাজুড়ে এমন ভাসিয়ে দেওয়া নামের পিছনে এখন ছুটছেন তৃণমূলের একদল কর্মী, আর এতেই পুরানো তৃণমূল আর নতুন তৃণমূলের তত্ত্ব খাড়া হচ্ছে প্রায় প্রতিটি ব্লকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy