E-Paper

বাঙ্কার কাণ্ডের লাল কি লুকিয়ে বারাণসীতে, চর্চা

গত শুক্রবার বিকেলে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে কিলোমিটার দেড়েক দূরে, সিরাপ বোঝাই তিনটি ও নির্মীয়মাণ একটি ‘বাঙ্কার’ (ভূগর্ভস্থ কুঠুরি) খুঁজে পায়। পুলিশের সন্দেহ, এর পিছনে লালই রয়েছে।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৩
মাটির নীচে মাদকভর্তি বাঙ্কারে তল্লাশি অভিযানে বিএসএফ।

মাটির নীচে মাদকভর্তি বাঙ্কারে তল্লাশি অভিযানে বিএসএফ। —ফাইল চিত্র।

বৈষ্ণব সাধুর বেশ ধরে বারাণসীতে গা ঢাকা দিয়ে আছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বাঙ্কার-কাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন সুশান্ত ঘোষ ওরফে ‘লাল’, অনুমান পুলিশের। পুলিশ সূত্রের দাবি, বারাণসী থেকেই সে বিপুল পরিমাণ কাশির নিষিদ্ধ সিরাপ বাংলাদেশে পাচারের জন্য কৃষ্ণগঞ্জ সীমান্তে পাঠাত। বারাণসীতে লালের প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। তা ছাড়া, লালের মা মায়া ঘোষও পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বারাণসী অথবা বৃন্দাবনে থেকে সাধনভজন করে। বুধবার কৃষ্ণনগর পুলিশ-জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, “সুশান্ত ঘোষ বর্তমানে বারাণসীতেই আছে বলে মনে হচ্ছে। তার সম্পত্তির বিশদ তথ্য হাতে এসেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে।”

গত শুক্রবার বিকেলে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে কিলোমিটার দেড়েক দূরে, সিরাপ বোঝাই তিনটি ও নির্মীয়মাণ একটি ‘বাঙ্কার’ (ভূগর্ভস্থ কুঠুরি) খুঁজে পায়। পুলিশের সন্দেহ, এর পিছনে লালই রয়েছে। কারণ, মাস ছয়েক আগে লালের লোকজন পাচার করার সময়ে ২০ হাজার সিরাপের বোতল ধরেছিল পুলিশ। এর পরেই লাল বেপাত্তা।

তদন্তে জানা যায়, কৃষ্ণগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে লালের স্থাবর সম্পত্তি ছড়িয়ে রয়েছে। কিছু নিজের নামে, কিছু মা ও ভাইয়ের সঙ্গে। তদন্তকারীদের দাবি, সে সব মূলত পাচারের টাকায় কেনা। আগে লালের পরিবার থাকত লক্ষ্মীডাঙা এলাকায়। শরিকি ভাগাভাগিতে লালের বাবার ভাগে জমি তেমন পড়েনি। বছর দশেক আগে পরিবারটি কলেজপাড়ায় থাকা শুরু করে। সম্বল ছিল বাড়িতে ছোট মুদির দোকান।

কিন্তু গত কয়েক বছরে লাল ফুলে-ফেঁপে ওঠে। পুলিশ জেনেছে, এই সময়েই টুঙি এলাকায় নিজের নামে ১২ শতক, মায়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে ১২ শতক ও ভাইয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে ১৩ শতক জমি কেনে লাল। তার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিললেও, তাতে বিশেষ টাকা নেই। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্ট মারফত লাল তার শাগরেদ রাজীব মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে ৮০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিল। তা দিয়েই বারাণসীতে জমি কেনা হয়। বারাণসীর এক আইনজীবী লালের নামে একটি জমির ‘গিফট ডিড’ও পাঠিয়েছিলেন।

গত জুলাইয়ে ২০ হাজার বোতল সিরাপ উদ্ধারের পরে উত্তরপ্রদেশের তিন ধৃত গাড়ি চালককে জেরায় পুলিশ জেনেছে, কী ভাবে বারাণসী থেকে হাতবদল হয়ে সিরাপের গাড়ি নদিয়ায় পৌঁছয়। স্থানীয় ‘নেটওয়ার্ক’ পরিচালনার ভার থাকে ভীমপুরের মহেশনগরের বাপন হালদার ও কৃষ্ণগঞ্জ থানার ধরমপুরের রাজীব মণ্ডলের। লেনদেন হয় নগদে। লাভের টাকা বাজারে খাটানো হয়। নিতান্ত দরকার না হলে, ব্যাঙ্ক লেনদেন হয় না। তাই লালের অ্যাকাউন্টে তেমন টাকা মেলেনি বলে পুলিশের দাবি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nadia police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy