বহরান নিশ্চিন্তপুর মোড় থেকে রামপাড়া ঘাট যাওয়ার রাস্তা এমনই বেহাল।— গৌতম প্রামাণিক
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি ২৯টি বেহাল রাস্তা সংস্কারের জন্যে রাজ্য সরকারের কাছে একাধিকবার দরবার করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। তার চার মাস কাটতে চললেও সংস্কারের টাকা আসেনি। এমনকী চিঠির প্রাপ্তিটুকুও স্বীকার করা হয়নি বলে অভিযোগ। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ জেলা পরিষদ তাদের দখলে রয়েছে বলেই রাজ্য সরকার টাকা দিতে গড়িমসি করছে। আর এ দিকে, রাস্তার হাল দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে। বর্ষায় ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হবে বুঝে প্রমাদ গুণছেন ভুক্তভোগীরা। ক্ষোভ বাড়ছে তাদের।
কান্দির ভরতপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, কান্দরার মোড় থেকে সালু গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ। কান্দি-সালার রাজ্য সড়কের ধারে কান্দরার মোড়। সেখান থেকে পার্বতপুর, প্রসাদপুর হয়ে সালু গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় দশ বছর আগে রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। তার বছর তিনেকের মধ্যে পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। ইতিউতি তৈরি হয়েছে খানাখন্দ।
ওই রাস্তা দিয়ে এক সময় পাঁচটি বাস চলত। রাস্তা খারাপের জন্যে কিছু দিন হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাস। এখন রাস্তা এতটাই বেহাল যে সাইকেলে চলাফেরা করতেও সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মানব মাঝি, তপন দাসেরা বলেন, ‘‘বহুবার স্থানীয় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়েও কাজ হয়নি। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছি না।” ওই রাস্তা দিয়েই পড়ুয়াদের স্কুল ও কলেজে যেতে হয়। চিকিৎসার প্রয়োজনে হাসপাতালে যেতেও ‘লাইফলাইন’ ওই রাস্তা। বড়ঞা এলাকার খরজুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের আন্দি মোড় থেকে সনকপুর পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তারও এক হাল।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কমলেশ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, প্রয়োজন বুঝে ২৯টি রাস্তার প্রায় ১২৫ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছিল। তাঁর দাবি, ‘‘সরকারের তরফে টাকা দেওয়ার আশ্বাসও মিলেছিল। সেই মতো টেন্ডারও ডাকা হয়। কিন্তু, চার মাস কেটে গেলেও কোনও টাকাই আসেনি। সে জন্যেই রাস্তা সাড়ানো যাচ্ছে না!’’ তবে এখনই হাল ছাড়ছেন না জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। কমলেশবাবু বলেন, ‘‘এমনটা চললে আমরা আন্দোলনে নেমে সংস্কারের অর্থ বরাদ্দ করাব।”
রাস্তা সংস্কারে গড়িমসির জন্যে রাজ্য সরকারের দায়ী করে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কংগ্রেসের শিলাদিত্য হালদার। তাঁর আবার অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার তো বটেই জেলা প্রশাসনও জেলার রাস্তাঘাট-সহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য উদ্যোগী হচ্ছে না।’’ জেলা পরিষদ কংগ্রেসের দখলে রয়েছে বলেই ইচ্ছাকৃত ভাবে এমনটা করা হচ্ছে—অভিযোগ তাঁর। জেলাবাসীর স্বার্থে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করছে না— এমন অভিযোগ মানেননি জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কারের অর্থ কেন বরাদ্দ হচ্ছে না, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy