Advertisement
E-Paper

গ্রামের অন্দরে মাদক কারখানা

পুলিশের দাবি, এই পরিমাণ কাঁচা মাল দিয়ে অন্তত ২০ কোটি টাকার হেরোইন বানানো যেত। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২৪
হেরোইন তৈরির জিনিসপত্র।

হেরোইন তৈরির জিনিসপত্র।

এ বার হেরোইন তৈরির বড়সড় কারখানার হদিশ মিলল রঘুনাথগঞ্জ থানার গণকর গ্রামে।

কলকাতার এসটিএফ ও রঘুনাথগঞ্জ পুলিশ যৌথভাবে বুধবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে হেরোইন তৈরির কাঁচামাল, তৈরি হেরোইন, হেরোইন তৈরির যন্ত্রপাতি সহ নগদ ১২ লক্ষ টাকা আটক করেছে। হেরোইন তৈরির করার সময় কারখানার মধ্যেই পুলিশের হাতে বামাল ধরা পড়েছে তোফাজুল হক ও আনারুল ইসলাম নামে দু জন হেরোইনের কারবারি। তোফাজুলের বয়স ৪৮ বছর, বাড়ি লালগোলার দক্ষিণ লতিবেরপাড়া এবং আনারুলের বয়স ২১ বছর, বাড়ি লালগোলার সাহাবাদে। দুজনেই হেরোইনের পুরোনো কারবারি।

পুলিশ জানায়, লালগোলার নলডহরির বাসিন্দা স্বামী মন্টু শেখ মাদক কারবারের মামলায় ৪ বছর ধরে জেলে রয়েছে। স্ত্রী লালগোলা থেকে পালিয়ে তাই পুলিশের নজর এড়িয়ে রঘুনাথগঞ্জের গণকরে স্কুলের কাছে ৬ মাস আগে বাড়ি কিনে সেখানেই ফেঁদেছিল হেরোইন তৈরির কারখানা। সেখান থেকেই চালাচ্ছিল মাদকের কারবার। একটি মাদক কেসের সূত্রে তদন্ত নেমে কলকাতার এসটিএফ খবর পায় গণকরে এই হেরোইন তৈরির কারখানার। সেই খবরের সূত্রেই এসটিএফের একটি দল বুধবার রাত ২টো নাগাদ হানা দেয় গণকরের ওই বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে সশস্ত্র পুলিশের একটি দলও।

বাড়িটিকে চিহ্নিত করে প্রথমেই ঘিরে ফেলা হয়। তারপর হেরোইন কেনার টোপ দেখিয়ে খোলানো হয় দরজা। দরজা খুলেই চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। কারখানায় তখন দু’জন হেরোইন তৈরিতে ব্যস্ত ছিল। তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। সেখান থেকে মেলে ১১৬০ গ্রাম সদ্য তৈরি হেরোইন। সম্ভবত এদিনই তা কাউকে ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল। কারখানার ঘরেই মেলে হেরোইন তৈরির কাঁচা মাল হিসেবে মজুত করা ১৫০ কিলোগ্রাম সোডিয়াম কার্বোনেট, ৮৫ কিলোগ্রাম অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, ১৪.৮ লিটার অ্যাসেটিক অ্যানহাইড্রাইড, ১৩ লিটার অ্যাসেটিল ক্লোরাইড এবং নগদ ১২ লক্ষ টাকা। বাড়িটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, এই পরিমাণ কাঁচা মাল দিয়ে অন্তত ২০ কোটি টাকার হেরোইন বানানো যেত।

জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী জানান, ধৃত দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে লালগোলার নলডহরির মাদক কারবারের পাণ্ডা মন্টু সেখ বর্তমানে ৪ বছর ধরে জেলে থাকায় তার স্ত্রী সখিনা খাতুন নিজেই সেই মাদকের কারবার চালাতে রঘুনাথগঞ্জের গণকর গ্রামে একটি বাড়ি কেনে। সেখানেই পাঞ্চিং মেসিন সহ যাবতীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে গড়ে তোলে হেরোইন তৈরির একটি কারখানা। সেই বাড়িতে নিয়মিত মাদক তৈরির কাঁচামাল নিয়ে আসা হত। এদিন অবশ্য মন্টুর স্ত্রীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মাদক কারবারে জড়িতদের ধরতে তদন্ত চালানো হচ্ছে। খোঁজ চলছে মন্টুর স্ত্রীরও।

পুলিশ জানায়, বছর তিনেক আগেও রাজ্যে মাদকের কারবারে শীর্ষস্থানে ছিল লালগোলা। সেখানে বহু গ্রামে গড়ে উঠেছিল হেরোইন তৈরির কারখানা। সেই মাদক চক্রকে ভাঙতে ২০১৮ সালে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে জেলা পুলিশ। প্রায় দুশো মাদক কারবারিকে গ্রেফতারও করা হয়। উদ্ধার করা হয় কয়েকশো কোটি টাকার মাদক ও হেরোইন তৈরির কাঁচামাল।

STF Gankar Arreest heroine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy