Advertisement
E-Paper

বাম ভোটের হিসেব ছাপিয়ে মিশ্র প্রভাব

কৃষ্ণনগর শহরে প্রতি বারের মতো খোলা ছিল পাত্রবাজার। তবে শহরের বাকি এলাকায় অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০১:৩৯
শান্তিপুরে রেল অবরোধ বামও কংগ্রেস কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

শান্তিপুরে রেল অবরোধ বামও কংগ্রেস কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

বেসরকারি বাস রাস্তায় নামবে না, তা আগেই জানা গিয়েছিল। সর্বত্র ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল আদালতও। সেই সঙ্গে অন্য গাড়ি, দোকানপাট বন্ধ থাকা মিলিয়ে নদিয়ায় অনেকটাই প্রভাব পড়ল কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে কিছু শ্রমিক ও কর্মচারী সংগঠনের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে।

বহু জায়গাতেই কার্যত বামেদের কাছে সাংগঠনিক শক্তি যাচাইয়ের পরীক্ষাও ছিল এ দিন। তাই সকাল থেকে আগ্রাসী মেজাজেই পথে নামেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। কিছু জায়গায় জোরাজুরি করার অভিযোগ যএমন উঠেছে, অনেক ক্ষেত্রে গাড়িচালক বা ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ধর্মঘট সমর্থনও করেছেন। সব মিলিয়ে গত কয়েকটি নির্বাচনের ফলের নিরিখে নদিয়ায় বামেদের যা দৃশ্যমান শক্তি, তার তুলনায় ভালই প্রভাব পড়েছে।

কৃষ্ণনগর শহরে প্রতি বারের মতো খোলা ছিল পাত্রবাজার। তবে শহরের বাকি এলাকায় অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। সকালে দু’একটি বেসরকারি বাস চলতে শুরু করলেও আটকে দেন ধর্মঘটীরা। তবে টোটো চলেছে। রাস্তায় লোকজনও ছিল। রানাঘাট, চাকদহ, শিমুরালি ও ধানতলাতেও ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়েছে।

ফুলিয়া বাজারে বেশির ভাগ দোকান বন্ধই ছিল। পরে ফুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বামেরা। গোবিন্দপুরের কাছেও জাতীয় সড়কে অবরোধ করা হয়। ফুলিয়া ও শান্তিপুর স্টেশনে রেল অবরোধ হয়। ফুলিয়া, শান্তিপুর, তাহেরপুর, বাদকুল্লা এলাকায় বেশির ভাগ দোকান ছিল বন্ধ। বাস তো নয়ই, অটো-ট্রেকারের মতো ছোট গাড়িও সে ভাবে চলাচল করেনি। কিছু টোটো চলেছে। বুধবার শান্তিপুরে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে বিজেপি মিছিল করেছিল। কিন্তু এ দিন তারা পাল্টা প্রতিরোধের পথে হাঁটেনি।

নবদ্বীপে সাতসকালেই ধর্মঘটীদের মিছিল মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ ঘাটে পৌঁছে খেয়া চলাচল‌ বন্ধ করে দেয়। পরে বেলা ১০টা নাগাদ খেয়াঘাট চালু হয়। তখন অবশ্য খুব বেশি যাত্রী ছিল না। বিভিন্ন বাজার ও দোকান আংশিক বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার নবদ্বীপে তাঁতকাপড় হাটের দিন। ধর্মঘটীদের অনুরোধে কিছুক্ষণের জন্য কেনাবেচা বন্ধ থাকলেও পরে স্বাভাবিক ভাবেই হাটের কাজকর্ম হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “আমরা কাউকে আলাদা করে কোনও নির্দেশ দিইনি। প্রত্যেকে ব্যক্তিগত অভিরুচি অনুযায়ী দোকান খোলা বা বন্ধ রেখেছিলেন‌।”

বৃহস্পতিবার করিমপুর বাজারে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন। ফলে এমনিই দোকানপাট খোলেনি। অটো বা ছোট গাড়ি, ট্রাকও রাস্তায় তেমন ছিল না। তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকেও রাস্তায় মোটরবাইক ছাড়া গাড়িঘোড়া তেমন ছিল না। তবে কল্যাণী শহরে ধর্মঘটের কার্যত কোনও প্রভাব পড়েনি। শহরের দোকানপাট প্রায় সবই খোলা ছিল। সেন্ট্রাল পার্ক থেকে মেন স্টেশনের অটো ও টোটো রুটও ছিল স্বাভাবিক। তবে সরকারি অফিস বাদে গোটা হরিণঘাটা প্রায় বন্ধ ছিল।

নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বাস কর্মীরা কেউ এ দিন বাস চালাতে রাজি হননি। ফলে রাস্তায় বাস নামেনি।” নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারি সাহার মতে, “বহু ব্যবসায়ী স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে তাঁদের সংস্থা বন্ধ রেখেছেন। সে দিক দিয়ে ধর্মঘট সফল হয়েছে। সরকার দাবিগুলি নিয়ে পদক্ষেপ করলে খুশি হব।” সিটু-র জেলা সম্পাদক এস এম সাদির দাবি, “ধর্মঘটে মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ও অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।” আরএসপি প্রভাবিত ইউটিইউসি-র জেলা সম্পাদক সুবীর ভৌমিকও ধর্মঘট ‘সফল’ হওয়ায় জনসাধারণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তৃণমূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি সুনীল তরফদারও বলেন, “কল্যাণী সব ছাড়া জেলার বাকি সব এলাকায় মিশ্র প্রভাব পড়েছে।”

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, “জেলায় কোথাও অশান্তি হয়নি। সরকারি দফতরগুলিতে কর্মীদের উপস্থিতির হার স্বাভাবিক ছিল।”

CPIM Vote Count General Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy