E-Paper

চিকিৎসক প্রহৃত, ওসি-কে নিশানা করলেন শুভেন্দু

অভিযুক্তদের গ্রেফতারি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দিয়েছে আইএমএ এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৫:২৪
অসুস্থ চিকিৎসকের পাশে দেখতে শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে।

অসুস্থ চিকিৎসকের পাশে দেখতে শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে। ছবি: অমিত মণ্ডল।

চাঁদার দাবিতে প্রহৃত চিকিৎসক সুজন দাসকে দেখতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কল্যাণী জেএনএম কলেজ হাসপাতালে এলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরে বেরিয়ে এসে রাজ্য সরকার ও শান্তিপুর থানার পুলিশকে নিশানা করেন তিনি।

শুভেন্দু আসার সময়ে চিকিৎসকের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা ও ভাই। শুভেন্দুর দাবি, স্থানীয় থানার ওসি তাঁর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এফআইআর নম্বর দেননি বলে সুজন তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন। উল্টে যে বাঁচাতে গিয়েছিল, তাকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আসল অপরাধীরা তৃণমূলের কর্মী সমর্থক হওয়ায় পুলিশ তাদের হাত দেওয়ার সাহস পায়নি বলে শুভেন্দুর দাবি।

তবে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় পাল্টা বলেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করছে। বিজেপি নেতাদের উন্নয়নের কাজ নেই। তাই সুযোগ পেলেই চলে আসেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা করতে। আর নানা ঘটনা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করতে।” গত রবিবার সকালে ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ে চাঁদার দাবিতে বুঁইচা ঘোষপাড়ায় ফুলিয়া-আড়বান্দি রোডে চিকিৎসক সুজন দাসকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফিরে রোগী দেখতে শুরু করেও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে, সেখান থেকে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া বয়েছিল তাঁকে। সে দিনই তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। বুধবার বাড়ি ফেরার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সে দিনই তাঁকে জেএনএমে পাঠানো হয়।

অভিযুক্তদের গ্রেফতারি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দিয়েছে আইএমএ এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস। এ দিন দুপুর ১২ নাগাদ বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র অর্চনা মজুমদার সুজনকে দেখতে আসেন। শুভেন্দু যখন আসেন তখনও তিনি ছিলেন। এই নিগ্রহের প্রতিবাদে পতাকা ছাড়া, বুকে কালো ব্যাজ পরে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পথে নামার আহ্বান জানান শুভেন্দু। তিনি বলন, “আগামী ২৪ তারিখ বিধানসভা খুললে ডাক্তার নিগ্রহের বিষয়টি সেখানে তুলব।”

শুভেন্দুর দাবি, তিনি দেখা করতে আসায় তাঁকে বদলি করা হবে বলে সুজন আশঙ্কা করছেন।শুভেন্দু বলেন, “আমি ওঁকে বলেছি, আপনি স্বাস্থ্য দফতরের এক জন আধিকারিক। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনার রক্ষক এবং কর্তা। তিনি সাড়ে ১২ বছর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশমন্ত্রীও আছেন। তিনি অন্তত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে আপনাকে নিরাপত্তা দিন। আপনি মন্ত্রীকে ই-মেল করুন। হস্তক্ষেপ চান। তিনি যদি কিছু না করেন আমরা আছি, স্বাস্থ্যভবনে যাব।”

শুভেন্দুর অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শান্তিপুর থানার ওসি সুব্রত মালাকার ছিলেন ‘ভোট লুটের রাজা’। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের স্ত্রী বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী সদস্য হওয়ায় সেই কাজটা তিনি পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছেন তিনি। ফেরার সময় শুভেন্দু বলে যান, “শান্তিপুরের ওসি-কে ভাল করে টাইট দিতে হবে।” শান্তিপুর থানার ওসি এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, "এই বিষয়ে মামলা হয়েছে। এক জন আটকও হয়েছে। এখন কেউ এসে কোনও মন্তব্য করলে তা নিয়ে কী বলব? জেএনএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজনের বর্তমানে সিসিইউ-তে দেওয়া আছেন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। আজ, শুক্রবার তাঁর এন্ডোস্কোপি হওয়ার কথা রয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalyani Suvendu Adhikari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy