Advertisement
E-Paper

দেখা মেলে না, বেতন তবুও মাস পয়লায়

দু’একদিন নয়, টানা প্রায় সাতটা বছর তিনি স্কুলে আসছেন না। অথচ প্রতি মাসে দিব্যি বেতন পেয়ে যাচ্ছেন। সুতি ২ ব্লকের শ্রীরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ প্রধানশিক্ষক, পঞ্চায়েত সদস্য-সহ গ্রামের লোকজনের।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০২:২৭

দু’একদিন নয়, টানা প্রায় সাতটা বছর তিনি স্কুলে আসছেন না। অথচ প্রতি মাসে দিব্যি বেতন পেয়ে যাচ্ছেন। সুতি ২ ব্লকের শ্রীরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ প্রধানশিক্ষক, পঞ্চায়েত সদস্য-সহ গ্রামের লোকজনের।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মরত অবস্থায় কামালের বাবা মারা যান। তারপর ১৯৯৯ সালে ওই স্কুলে চাকরি পান তিনি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, চাকরি পাওয়ার পরে কিছুদিন নিয়মিত স্কুলে গেলেও গত সাত বছর ধরে স্কুলে আসছেন না তিনি।

স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য কংগ্রেসের সমর দাস জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রামের লোকজন একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছেন সুতির অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে। বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। সমরবাবুর অভিযোগ, ‘‘কিছু বলতে গেলে ওই শিক্ষক আবার পাল্টা বলেন—‘যা পারেন করুন, স্কুলে আসব না।’ এসআই অফিসের কারও মদতেই দুঃসাহস দেখাচ্ছেন ওই শিক্ষক।”

একই অভিযোগ দুই শিক্ষক সংগঠনের নেতাদেরও। সুতির তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তাপস দাস বলছেন, “মদত তো কোথাও কিছু একটা আছেই। শিক্ষাবন্ধুদের নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন করার কথা। তার পরেও এই অনিয়ম কী ভাবে সম্ভব?”

সিপিএমের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক সুদেব হালদারের কথায়, ‘‘গ্রামবাসীরা বহু বার এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন এসআই অফিসে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে একাধিক বার সর্বদলীয় বৈঠকও হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি।’’

প্রধান শিক্ষক উৎপলেন্দু সিংহ বলেন, “আমি ২০১০ সালে এই স্কুলে কাজে যোগ দিয়েছি। তখন দেখেই দেখছি, ওই শিক্ষক স্কুলে আসেন না। স্কুলে ১১১ জন পড়ুয়া। এতদিন ২ জন শিক্ষককে স্কুল চালাতে হয়েছে। সম্প্রতি ২ জন নতুন শিক্ষক পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে।”

উৎপলেন্দুবাবু জানান, ওই শিক্ষকের টানা গরহাজিরা নিয়ে প্রতি মাসে এসআই অফিসে রিপোর্ট পাঠানো হয়। তারপরেও ওই শিক্ষক কী ভাবে বেতন পেয়ে যাচ্ছেন সেটাই রহস্য। সুতির ভারপ্রাপ্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌগত বিশ্বাস বলেন, “একাধিক চক্রের দায়িত্বে থাকায় কাজের চাপে স্কুল পরিদর্শন করা যায় না। তবে ওই শিক্ষককে শো-কজ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কী উত্তর দিয়েছেন মনে নেই।”

যা শুনে রীতিমতো অবাক মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি দেবাশিস বৈশ্য। তিনি বলছেন, “সাত বছর স্কুলে না গিয়েও কী ভাবে ওই শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন? এসআই-ই বা কেন এতদিন আমাদের জানাননি, বুঝতে পারছি না। তদন্ত করে এর সত্যতা মিললে শুধু বেতন বন্ধই নয়, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।”

আর অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল হোসেন বলছেন, ‘‘আমি কখনও সখনও স্কুলে যাই বইকি। তবে অসুস্থ বলে নিয়মিত যেতে পারি না। এসআই অফিসকে সব জানানো আছে।”

Teacher Primary School Salary Absent
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy