প্রতিমাকে তখনও সোনার গয়নাগুলো পরানো হয়নি। এক হাতে ব্যাগ ও অন্য হাতে ছাগল নিয়ে মন্দির চত্বরে হাজির জিয়াগঞ্জের বছর ষাটেকের অনামিকা হালদার। প্রশ্ন করতে সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘‘দাড়াও হে বাপু আগে বসার জায়গাটা ঠিক করি। সারাটা রাত থাকতে হবে। দেরি হয়ে গেলে ঠিকমতো জায়গা পাব না যে।" অনামিকা হালদারের মতোই লালবাগ থেকে গোপাল হালদার, বহরমপুরের তৃষা মজুমদার—সকলেই এসে ভিড় করছেন চর দুর্গাপুরের কালী মন্দির চত্বরে। কারণ চর দুর্গাপুরে কালীপুজো।
শীতের শুরুতেই চর সীমান্তের এই কালীপুজো যার জৌলুস হার মানায় বছরের নামীদামি পুজোগুলোকেও। জেলার নানান প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয় ওই পুজো উপলক্ষে। মঙ্গলবার থেকে তার সূচনা।
দেশ ভাগ হয়েছে অনেক আগেই। তবু কিছু কিছু রীতিনীতি, কিছু ঐতিহ্য যা রয়ে যায় কাঁটাতারের ঊর্ধ্বে। চর দুর্গাপুরের এই কালীপুজোর সূত্রপাত বাংলাদেশে। রাজশাহীর টলটলি গ্রামে নাকি এই কালীপুজো হত বলে জানান স্থানীয় প্রবীণেরা। পরবর্তীতে এখানে চর দুর্গাপুরে সেই কালীমন্দির স্থাপন করা হয়। বেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশে তৈরি খয়ের কাঠের খুঁটিতে শামিয়ানা টাঙিয়েই পুজো হত সীমান্তের এই গ্রামে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাতেও ঘুন ধরেছে। তাই সে সব এখন আর ব্যবহার হয় না।