Advertisement
E-Paper

ধুলিয়ানে বোর্ড দখল তৃণমূলের

সরাসরি নির্বাচন জিতে কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদে শাসক দল যে দাঁত ফোটাতে পারেনি ভোটের ফল প্রকাশের পরেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে, ‘ঘোড়া কেনা-বেচায়’ তারা যে বিরোধীদের চেয়ে অনেক দড় ধুলিয়ান পুর বোর্ড দখল করে তা ফের প্রমাণ করল তৃণমূল। ধুলিয়ানে ২১ আসনের মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে ছিল মাত্র ৬টি আসন। বোর্ড গঠনের ধারে কাছেও ছিল না তারা। মঙ্গলবার তাই বাঁকা পথেই হেঁটেছিল তারা। ওই দিন, দলীয় কার্যালয়ে জেলা নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন সদ্য জয়ী বিজেপির ৩ কাউন্সিলর, সিপিএমের ২ জন এবং এক নির্দল প্রার্থী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০১:৩৫

সরাসরি নির্বাচন জিতে কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদে শাসক দল যে দাঁত ফোটাতে পারেনি ভোটের ফল প্রকাশের পরেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

তবে, ‘ঘোড়া কেনা-বেচায়’ তারা যে বিরোধীদের চেয়ে অনেক দড় ধুলিয়ান পুর বোর্ড দখল করে তা ফের প্রমাণ করল তৃণমূল।

ধুলিয়ানে ২১ আসনের মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে ছিল মাত্র ৬টি আসন। বোর্ড গঠনের ধারে কাছেও ছিল না তারা।

মঙ্গলবার তাই বাঁকা পথেই হেঁটেছিল তারা। ওই দিন, দলীয় কার্যালয়ে জেলা নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন সদ্য জয়ী বিজেপির ৩ কাউন্সিলর, সিপিএমের ২ জন এবং এক নির্দল প্রার্থী। সেখানে তাঁরা শাসক দলকে সমর্থন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ফিরে যাওয়ার পরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ১২ জন কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গড়তে চলেছে তারা।

সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশের সাহায্যে বাড়ি থেকে আমাদের দুই কাউন্সিলরকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে সমর্থন আদায় করেছে তৃণমূল।’’

ওই পুরসভায় কংগ্রেস ৮টি আসনে, তৃণমূল ৬টি, বিজেপি ৪টি এবং এক নির্দল প্রার্থী জয়ী হন। তবে, মানুষের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলের বোর্ড গঠনের এই প্রক্রিয়াকে স্থানীয় বাসিন্দারা কতটা মেনে নেবেন তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।

দলত্যাগ করে যারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা হলেন—৬, ৭ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী বিজেপি প্রার্থী সুবল সাহা, প্রশান্ত সরকার ও মীরা মণ্ডল। ১৫ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী সিপিএমের আশরফ হোসেন ও ফারহা খাতুন এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী নির্দল প্রার্থী নুর ইসলাম খান। জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেন কোনও রাখঢাক না রেখেই কবুল করেছেন, ‘‘আমাদের স্থানীয় নেতারা কয়েক দিন ধরে ওই সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাজি হয়েছেন।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ধরে ওই ৬ দলত্যাগীকে দুটি বাড়িতে রাখা হয়েছিল। দু’জন সিপিএমের ও নির্দল প্রার্থীকে এক জায়গায় এবং বিজেপির তিন নির্বাচিত সদস্যকে অন্য এক জায়গায রাখা হয়। মঙ্গলবার রাতেই তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কলকাতায়।

২০১০ সালে ধুলিয়ান পুরবোর্ড দখল করেছিল সিপিএম। পরে সিপিএমের সদস্যরা এক জোট হয়ে কংগ্রেসে এবং পালা বদলের পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ধুলিয়ান পুরবোর্ড ছিল তৃণমূলের দখলে।

কিন্তু রাজ্য জুড়ে শাসক দলের জয় জয়াকার সত্ত্বেও ধুলিয়ানে তাঁরা যে তেমন জমি তৈরি করতে পারেনি, ভোটের ফল প্রকাশের পরেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘যেখানেই থমকে গিয়েছে তারা (তৃণমূল) সেখানেই ঘোড়া কেনাবেচার নোংরা রাজনীতির পথে হেঁটেছে তৃণমূল। এটাই ওদের স্বভাব।’’

ধুলিয়ানে পুরবোর্ড গড়া নিয়ে শাসক দল যে তলায় তলায় ‘কেনাবেচা’র খেলায় নেমেছে বিরোধীরা দিন কয়েক ধরেই তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। ধুলিয়ানের বিজেপি-র ৪ জনের মধ্যে ৩ কাউন্সিলরই দলকে সাফ জানিয়েও দিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে ধুলিয়ানে তাঁরা বোর্ড গড়তে রাজি নন। বিজেপি-র এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ওঁরা তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে রয়েছেন।’’

এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই দলবদলের মাস্টার স্ট্রোক দেন বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান দিলীপ সরকার। দিলীপবাবুর মেয়ের সঙ্গে বিজেপি কাউন্সিলর সুবলবাবুর দাদার ছেলের বিয়ে হয়েছে। সেই বৈবাহিক সম্পর্কের জেরেই ৩ বিজেপি নেতাকে তৃণমূলে টেনে এনেছেন তিনি বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।

দলত্যাগী ওই তিন কাউন্সিলরকেই ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা মুখপাত্র সুভাষ মণ্ডল বুধবার ঘোষণা করেন, ‘‘প্রলোভনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন ওই ৩ কাউন্সিলর। এ ভাবে দলত্যাগ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’’

tmc captures dhulian dhulian municipality dhulian horse trading
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy