জমি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক দিনমজুরের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল গয়েশপুর পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের সম্পাদক সুজিত ঘোষ ওরফে বুড়োর বিরুদ্ধে। বুড়ো ছাড়াও তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সুদীপ কর ওরফে টিঙ্কু এবং সাহেব কুড়ির বিরুদ্ধেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পুষ্প ঘোষ এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুষ্পর স্বামী গোপাল ঘোষ জানান, তাঁর নিজের ভিটেবাড়ি নেই। রাজমিস্ত্রির কাজ করে কোনও রকমে দিন গুজরান করেন। এই অবস্থায় বছর দেড়েক আগে টিঙ্কু ও বুড়ো তাঁকে জানায়, সরকারি জমি রয়েছে এক নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে দেড় শতক জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় গোপালকে। বলা হয়, ওই জমির জন্য এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা লাগবে। ওই টাকা দিলে প্রথমে পুরসভা কর আদায় করবে। তারপর দীর্ঘ দিন ধরে বাস করার জন্য জমির কাগজপত্রও দেবে সরকার।
গোপাল বলেন, ‘‘বুড়ো দলের বড় নেতা, পুর প্রধান মরণকুমার দে’র ঘনিষ্ঠ। আর টিঙ্কুও সব সময় দলের সঙ্গে সঙ্গেই থাকে। ফলে ওদের কথায় ভরসা রেখে চড়া সুদে ধার করে টাকা দিই।’’ তিনি জানিয়েছেন, টাকা নিয়ে বুড়ো তাঁকে পুরসভার একটি করের কাগজ দেয়। কর আদায়ের তারিখ দেওয়া রয়েছে ২০১১ সালের মাঝের দিকে। আর সই রয়েছে উপ পুরপ্রধান মোহন রামের। অথচ মোহন উপ পুরপ্রধান হয়েছেন ২০১৫ সালে। এটা দেখেই গোপালের সন্দেহ হয়। এক সময় তিনি জানতে পারেন, ওই জমি আসলে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কোনও ভাবেই জমি তিনি পাবেন না। এর পরে বিষয়টি তিনি পুর প্রধান মরণকে জানান।
মরণ বলেন, ‘‘করের রসিদ দিয়েছে পুরকর্মী বিনয় পাল। ওর বিরুদ্ধে আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। তবে আমার দলের যে নেতাদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা। এটা হয়ত দলেরই কেউ আমার বদনাম করার জন্য এটা করছে।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পিছনে দলের অন্তর্দ্বন্দ্বও থাকতে পারে। কয়েক মাস ধরে গয়েশপুরে শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিচ্ছে। পুর প্রধান মরণের সঙ্গে শহর তৃণমূলের সভাপতি সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় ওরফে বাপির দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। সে কারণে পুর প্রধানের ঘনিষ্ঠ নেতাদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে ওই সূত্রের দাবি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়েছে। যদি কেউ দোষী হয়, তার শাস্তি হবে।’’