Advertisement
২১ মে ২০২৪
COVID-19 vaccine

সফল ভাবেই টিকার মহড়া

যে প্রক্রিয়ায় যে সব নিয়ম মেনে করোনার টিকা দেওয়া হবে তার প্রতিটি পদক্ষেপ এ দিন সফল ভাবে অক্ষরে-অক্ষরে পালন করা হল।

শুরু টিকার মহড়া। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

শুরু টিকার মহড়া। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩৩
Share: Save:

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আগেই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন যে, রাজ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথম করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হবে। শুক্রবার শুরু হয়ে গেল সেই প্রতিষেধক দেওয়ার ড্রাইরান বা মহড়া।

ঠিক যে প্রক্রিয়ায় যে সব নিয়ম মেনে করোনার টিকা দেওয়া হবে তার প্রতিটি পদক্ষেপ এ দিন সফল ভাবে অক্ষরে-অক্ষরে পালন করা হল। সিভিক ভল্যান্টিয়ারের কাছে নাম নথিভুক্ত করা থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষণ ঘরে আধ ঘন্টা কাটানোর মতো সব ধাপ অনুসরণ করা হয়েছে।

জেলায় ৫৭টি কোল্ড চেন বা টিকা সংরক্ষণ কেন্দ্র আছে। আগামী দিনে যাতে প্রতিটি কোল্ড চেন থেকে করোনার টিকা দেওয়া যায় তার জন্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, টিকা হাতে পেলেই তা দেওয়া শুরু করা যাবে। প্রতিটি কোল্ড চেন থেকে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য ছয় জন করে নার্স, এএনএম ও সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। টিকা যাঁরা দেবেন তাঁরা কতটা প্রস্তুত এবং গোটা প্রক্রিয়ায় কতটা সময় লাগছে, এই সবই মহড়ায় বুঝে নেওয়া হয়েছে।

মহড়ায় প্রথমেই এক জন সিভিক ভল্যান্টিয়ার টেবিল পেতে বসে থাকলেন। তার কাছে ছিল পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা। মহড়ায় টিকা নিতে আসা স্বাস্থ্যকর্মীরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিলেন। কর্তব্যরত সিভিক ভল্যান্টিয়ার তালিকায় নাম মিলিয়ে দেখে নিলেন। তিনি অনুমতি দেওয়ার পর সকলকে নিয়ে যাওয়া হল নির্দিষ্ট একটি ঘরে। সেখান থেকে একে-একে ডাকা হল প্রতিষেধক নেওয়ার ঘরে। সেই ঘরে একটি টেবিলে এক জন নার্স তথ্য নভিভুক্ত করছেন। সামনে ল্যাপটপ। সেখানে দেখাতে হল পরিচয় পত্র। তালিকায় নাম মিলিয়ে দেখলেন তিনি। তার পর প্রতিষেধক নেওয়ার অনুমতি দিলেন।

এ বার প্রতিষেধক দেওয়ার পালা। এক জন নার্স সেটি দেবেন। তাঁর পাশের চেয়ারে একে একে সবাইকে বসতে হল। কিন্তু যেহেতু মহড়া তাই কারও দেহে সূঁচ ফোটানো হল না। কর্তব্যরত নার্স সকলকেই জানিয়ে দিলেন যে, প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা, স্যানিটাইজার ব্যবহারে শিথিলতা দেখানো যাবে না।

তিনি আরও জানিয়ে দিলেন যে, কারও শরীরে র‌্যাশ বা অন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বা অস্বস্তি বোধ হলে চিকিৎসক ও প্রতিষেধক প্রয়োগে যুক্ত কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পর্যবেক্ষণের ঘরে তাঁদের আধ ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয়। দু’জন স্বাস্থ্য কর্মী তাঁদের পর্যবেক্ষণ করবেন। এই আধ ঘণ্টার মধ্যে কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা না দিলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সমস্যা বাড়লে পাশের ‘এ ই এফ আই ব্যবস্থাপনা ঘর’-এ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে শয্যায় শুইয়ে খবর দেওয়া হবে সেই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককে।বাইরে অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি থাকবে। প্রয়োজন হলে ওই ব্যক্তিকে অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।

কৃষ্ণনগরের সদর ইউনিটের ইনচার্জ সঙ্গীতা রায় চৌধুরী বলছেন, “আমরা সব রকম ভাবে তৈরি। আশা করছি কোনও সমস্যা হবে না।” এ দিন জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি বিষ্ণুপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিষেধক দেওয়ার ড্রাইরান হয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “জেলার কোল্ড চেনগুলিতেও একে একে ড্রাই রান করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 vaccine Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE