বহু যুগ আগে স্কুল ফাইনালে একই নম্বর পেয়েছিলেন দুই ভাই। বাম আমলে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত এবং তাঁর যমজ অতীশ দাশগুপ্ত।
বছর বিশেক আগে সেই রেকর্ড ছুঁয়েছিল আরও এক জোড়া যমজ, গাইঘাটার রজত আর রাকেশ সরকারও মাধ্যমিকে একই নম্বর পায়— ৫৭৭। ফের সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাল কল্যাণীর যমজ অর্চিষ্মান এবং আয়ুষ্মান চক্রবর্তীও, মাধ্যমিকে তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৭।
কল্যাণী স্প্রিংডেল হাই স্কুলের ছাত্র আয়ুষ্মান আর অর্চিষ্মান নদিয়ার এই প্রান্তিক শহরের সেন্ট্রাল পার্কের বাসিন্দা। বাবা শক্তিপ্রসাদ চক্রবর্তী ফুলিয়া বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক, মা উর্বী চক্রবর্তী কল্যাণী শিক্ষায়তনের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা। স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া বা খেলাধুলো— সবই দুই ভাইয়ের এক সঙ্গে। দু’জনেই অঙ্কে ১০০ পেয়েছে। জীবনবিজ্ঞান এবং ভূগোলে যথাক্রমে ৯৮ এবং ৯৬। অন্য বিষয়ে দু’এক নম্বরের হেরফের হলেও সব মিলিয়ে যোগফল একই।
মিল আরও আছে। দু’জনেই খুব ছোটবেলা থেকে একই সঙ্গে গান শিখেছে, এক সঙ্গে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশও নিয়েছে। দু’জনেরই প্রবল আগ্রহ কুইজ়ে, স্কুলের হয়ে নানা প্রতিযোগিতাতেও গিয়েছে তারা। ক্রিকেট এবং ফুটবলেও তাদের প্রায় সমান আগ্রহ। দু’জনেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের সমর্থক। দু’জনেরই প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি।
শক্তিপ্রসাদ বলেন, “ওদের দুই ভাইয়ের খুব মিল। এক জন আর এক জনকে ছাড়া থাকে না।আমরা চাই, জীবনে সফল হওয়ার পাশাপাশি ভাল মানুষও হোক।" উচ্চ মাধ্যমিকে দু’জনেই নিজেদের স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চায়। তবে ভবিষ্যতে তাদের চলার পথ হয়তো ভিন্ন হয়ে যাবে। আয়ুষ্মান ‘নিট’ পরীক্ষা দিয়ে ডাক্তারি পড়তে চায়। অর্চিষ্মান চায় পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে।
ফারাক আছে আরও এক জায়গায়— ফুটবল। অর্চিষ্মান ব্রাজিল সমর্থক, তুমুল নেমার-ভক্ত। আর আয়ুষ্মানের প্রিয় দল আর্জেন্টিনা, প্রিয় তারকা মেসি। অর্চিষ্মান মোহনবাগান সমর্থক, আর আয়ুষ্মান ইস্টবেঙ্গল! তবে তাতে তাদের বন্ধুত্ব টসকায় না, তর্কাতর্কি জমে, এটুকুই। দুই ভাইয়ের কথায়, “পরে হয়তো আমাদের পেশা আলাদা হয়ে যাবে। তবে আমরা একসঙ্গেই থাকতে চাই।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)