নীচে মাচ, উপরে পানিফল। রানিনগরে সাফিউল্লা ইসলামের তোলা ছবি।
একই পুকুরে দুই রকমের চাষ। আর তাতেই লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। মাছ ও পানিফল উভয় চাষই হচ্ছে পুকুরে। সৌজন্যে, আতমা (এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি) প্রকল্প।
আর ওই চাষকে ঘিরে লাভের আশা দেখছেন সীমান্তের ব্লক রানিনগরের পুকুর মালিকেরা। মাত্র হাজার চারেক টাকার ওই প্রকল্পে এঁদো পুকুরে পানিফলের সঙ্গে মাছ চাষ করে ইতিমধ্যেই লাভের মুখ দেখেছেন রানিনগরের শেখপাড়া এলাকার চাষি মাইনুল ফকির।
এই চাষের জন্য পানিফলের চারা, জৈব সার ও মাছের পোনা দেওয়া হচ্ছে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে। জেলা কৃষি দফতরের দাবি, উদ্ভাবনী চাষের জন্য বাছাই করা চাষীদের ওই সহায়তা দেওয়া হয়। রানিনগরে ছ’জন চাষীকে বিভিন্ন উদ্ভাবনী চাষের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে মাইনুল ফকির পানিফল ও মাছ এক সঙ্গে চাষ করছেন। কৃষি দফতরের কর্তাদের দাবি, বিঘা খানেকের পুকুরে মাছ ও পানিফল চাষ করতে হাজার দশেক টাকা খরচ হবে। চাষি মাস আটেকের মধ্যে ২০ হাজার টাকা আয় করবেন।
পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই দু’কথা শুনিয়ে যায় মাইনুলকে। অনেকে আবার বাড়িতে এসেও বলে যান, ‘‘বাড়ি লাগোয়া পুকুরটা একটু পরিষ্কার করতে পার না! কচুরীপানায় ভরে গিয়েছে।’’ মুচকি হেসে ব্যস্ত মাইনুল লোকজনের হাতে কয়েকটা পানিফল তুলে দেন। মাইনুলের কথায়, ‘‘আমাদের এলাকায় পানিফলের একেবারে প্রচলন নেই। অনেকে ওটা কী সেটা জানে না। ফলে হাতে ধরিয়ে দিয়েও রক্ষে নেই। লোকজন বলে এটা কি রান্না করতে হয়, নাকি সেদ্ধ করে খেতে হবে। পরে খাওয়ার পর সাবাস না দিয়ে কেউ ফেরে না।’’
মাইনুলের দাবি, ‘‘এক মরসুমেই কয়েক কুইন্ট্যাল পানিফল বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি পানিফলের দাম মিলেছে ৪০ টাকা।’’ মাইনুলের এঁদো পুকুরে এখন সোনা ফলছে। মাইনুলের এই সাফল্যে এলাকার অন্যান্য চাষিরাও মাছের সঙ্গে এই পানিফল চাষ করার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছে। রানিনগর-২ ব্লকের উপ-কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহা বলেন, ‘‘মাইনুলকে ৪ হাজার টাকা দিয়েছিলাম মাছ, পানিফলের চারা আর জৈব সারের কেনার জন্য। তিনি ওই চাষে সাফল্য পেয়েছেন।’’ ইতিমধ্যে এলাকার অনেক চাষি দেখে গিয়েছেন মাইনুলের পুকুর। তাঁরাও আগ্রহী এই চাষে। দফতরের কর্তারা বলছেন, ‘ওই উৎসাহী চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে দফতর। প্রয়োজনে এলাকায় গিয়ে চাষের পদ্ধতিও বুঝিয়ে দেবেন কর্মীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy