নজরে রাস, লিডার্স ক্লাব, নদিয়ার শান্তিপুর। ছবি: প্রণব দেবনাথ। —নিজস্ব চিত্র।
অদ্বৈতভূমে রাস উৎসবের খ্যাতি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। মায়াময় আলো, রাইরাজার শোভাযাত্রার টানে প্রচুর মানুষ রাজপথে নামেন। জনমনে প্রভাব ফেলতে পিছিয়ে নেই ক্লাব, বারোয়ারিগুলোও। সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে সুচারু ভাবে মিলিয়ে দিচ্ছে অধুনা কালের থিম। ঘুরে দেখল আনন্দবাজার।
খাঁ পাড়া সুস্মিত স্মৃতি সঙ্ঘ
প্রায় ৪০ বছর আগে পাড়ার বছর ষোলোর এক কিশোর জলে ডুবে মারা যায়। তার স্মৃতিতে শান্তিপুরের খাঁ পাড়ায় গড়ে ওঠে সুস্মিত স্মৃতি সঙ্ঘ। পরে তারা রাস পুজো শুরু করে। এ বার ৩৬তম বর্ষ। প্রতি বছরই বিভিন্ন জায়গার বিশিষ্ট মন্দির এবং দর্শনীয় স্থান উঠে আসে মণ্ডপে। এই বছর তৈরি হচ্ছে কামাখ্যা মন্দির। চট দিয়ে তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম পাহাড়। মণ্ডপসজ্জার কাজ মূলত এলাকার বাসিন্দারাই করে থাকেন। প্রতি বছরই মানুষের ঢল নামে মণ্ডপ দেখতে। এর আগেও কখনও অমরনাথ যাত্রা উঠে এসেছে মণ্ডপে, কখনও একাকী দাঁড়িয়ে থাকা ভাঙা বাড়ি। এই বছরও মণ্ডপে মানুষের ঢল নামবে বলেই আশা পুজো উদ্যোক্তাদের।
আগমেশ্বরীতলা ইয়ং স্টাফ
এক সময় এলাকার কিশোরেরা উদ্যোগী রাস পুজো শুরু করেছিল। সময়ের সঙ্গে পুজোর কলেবর বেড়েছে। শান্তিপুরের বারোয়ারিগুলির মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ আগমেশ্বরীতলা ইয়ং স্টাফের রাস। এই বছরের থিম ‘তুলির টানে রাজস্থান’। রাজস্থানের মানুষের জীবনযাত্রা, তাঁদের সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। রাজস্থানের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে সেখানকার মতো করেই। আবার সেখানকার সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে রাজস্থানের নাচ-গানও থাকবে। পুতুল দিয়েই সেই নাচ দেখানো হবে। মূলত লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। এর আগে নানা কার্টুন চরিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছিল মণ্ডপ। কখনও ধবলগিরি, কখনও বানানো হয়েছে লন্ডন সেতু। এমনকি যন্ত্রের সাহায্যে নদীর উপরে সেই সেতুর ওঠা নামা, জাহাজ চলাচল সবই দেখানো হয়েছিল। পরিকল্পনামাফিক থিম তৈরি করে তা নিখুঁত ভাবে রূপায়ণের জন্য এই পুজো কমিটির খ্যাতি।
লিডার্স ক্লাব
১৯৭৫ সালে শান্তিপুর শহরের তরফদার পাড়ার বাসিন্দারা উদ্যোগী হয়ে রাস পুজো শুরু করেন। ১৯৯৯ সালের রজত জয়ন্তী বর্ষ থেকে থিমে নজর দেওয়া হয়। বিভিন্ন আকর্ষণীয় থিমের পাশাপাশি নানা সামাজিক বার্তা পুজো উদ্যোক্তারা দিয়েছেন। এ বছরের থিম 'মায়ার বাঁধন'। লোহার কাঠামো বেঁধে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। কাপড়, ফিতের বন্ধন তৈরি করে মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের জানান, এই বন্ধনের মধ্যে দিয়েই সকলে আরও বেঁধে বেঁধে থাকার কথা বলতে চাইছেন। এর আগেও নানা সময় সামাজিক বার্তা তাঁরা দিয়েছেন মণ্ডপে। শিশুশ্রম বিরোধী বার্তা যেমন উঠে এসেছে, তেমনই অতিমারির বাধা অতিক্রম করে এগনোর বার্তাও ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy