Advertisement
E-Paper

মারা গেলেন মা-ছেলে, জ্বর-তপ্ত গ্রামে অসুস্থ শতাধিক

বুধবার রাতে দাস পরিবারের কৃষ্ণা (৩৭) মারা গিয়েছিলেন চব্বিশ ঘণ্টার মধ্য়েই মারা গিয়েছিল তাঁর এগারো বছরের ছেলে অনুপম। তবে মা-ছেলের মৃত্যুর পরেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পরিবারের অন্যরাও। প্রশান্ত দাস-সহ বাকিদের ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
হাসপাতালে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

এক দিনের ব্যবধানে জ্বরে বেহুঁশ হয়ে মারা গিয়েছিলেন মা ও ছেলে। তাঁদের অন্ত্যষ্টি মেটার আগেই সুতির গাঙ্গিন গ্রামের ওই পরিবারের আরও চার জন জ্বরে প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে।

সুতির ওই গ্রাম জুড়ে, সেই অজানা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা এখন একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে।

তবে, এখনও সে গ্রামে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পা পড়েনি। আসেননি কোনও চিকিৎসক দলও। পঞ্চায়েত সদস্য, তৃণমূলের সোমা দাসের অভিযোগ, ‘‘সাত দিন হয়ে গেল, বলে বলেও ব্লক থেকে কোনও মেডিক্যাল টিম এল না।’’

বুধবার রাতে দাস পরিবারের কৃষ্ণা (৩৭) মারা গিয়েছিলেন চব্বিশ ঘণ্টার মধ্য়েই মারা গিয়েছিল তাঁর এগারো বছরের ছেলে অনুপম। তবে মা-ছেলের মৃত্যুর পরেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পরিবারের অন্যরাও। প্রশান্ত দাস-সহ বাকিদের ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে।

গ্রামের ওই দাস পরিবারের পড়শি সুব্রত দাস। তিনি বলেন, “গ্রামে এক জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন। তিনিও বলেছেন। তার পরেও জ্বর নিয়ে হেলদোল নেই স্বাস্থ্য দফতরের। লোকে তাই ছুটছেন হাতুড়ের কাছে।”

শুক্রবার সেই গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, জ্বরের প্রকোপের পাশাপাশি আতঙ্কের ছায়া গ্রামে। গাঙ্গিন গ্রামের ঘরে ঘরে জ্বর। মৃত পরিবারের বাড়ির পাশেই সনৎ চক্রবর্তী ও তার ছেলে চার দিন ধরে জ্বরে কাবু। সঙ্গে রয়েছে মাথা ব্যাথা, পাতলা দাস্ত। অনেকের গায়ে লাল দাগড়া। সনিকা দাস ও তাঁর এক বছরের ছেলের জ্বর চলছে পাঁচ দিন ধরে। শিশুটির অবস্থা কাহিল। শরদীপ দাস, মাধ্যমিকের ছাত্রী মাম্পি দাস ও তার মা দিপালী দাসও জ্বরে ছটফট করছেন।

চিকিৎসকেরা গ্রামে না গেলেও স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘শুনে মনে হচ্ছে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরূপম বিশ্বাস ও ডেঙ্গির দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসক কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই মেডিক্যাল টিম নিয়ে গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ সত্ত্বেও সেই চিকিৎসক গ্রামে পৌঁছল না কেন? উত্তর মেলেনি।

তবে, এ দিন, খবর পেয়েই গাঙ্গিনা গ্রামে গিয়েছিলেন বিডিও বিডিও দীপঙ্কর রায়। পরে গ্রামে যান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত মালাকারও। স্পষ্ট করে রোগের কারণ না বলতে পারলেও সন্দেহ ডেঙ্গি।

এ দিন, ওই দুই সরকারি কর্তা গ্রামে পৌঁছতেই, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁদের আতঙ্কের কথা শুনে, গ্রামেরই একটি স্কুল বাড়িতে ডেকে নেওয়া হয় গ্রামবাসীদের। বৈঠক হয় সেখানেই। রোগের লক্ষণ, খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করেন ব্লক স্বাস্থ্য অধিকর্তা।

অমিতবাবু জানান, যারা মারা গিয়েছেন তাঁদের সম্পর্কে কোনও রিপোর্ট ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে নেই। তাঁদের রক্তর নমুনা নেওয়ার সুযোগও ঘটেনি। তিনি বলেন, “ব্লকে এখনও পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে কারও রক্ত পরীক্ষা করা হয়নি।’’ তবে, এ দিন ওই গ্রামের ৪৮ জনের রক্তের নমুনা ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য জেলা সদরে পাঠানো হয়েছে।

Health fever Death জঙ্গিপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy