Advertisement
২৯ মে ২০২৪
Cyclone Yaas

ইয়াস আতঙ্কে ছাদ পেলেন যাযাবরেরা

ইয়াসের বিপদ আসছে জেনেও খোলা আকাশের নীচেই দিন কাটছিল তাঁদের বুধবার দুপুরেও।

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২১ ০৬:৩৫
Share: Save:

মাঠ থেকে সরানো হল যাযাবরদের দলকে। ইয়াসের বিপদ আসছে জেনেও খোলা আকাশের নীচেই দিন কাটছিল তাঁদের বুধবার দুপুরেও। সাগরদিঘির কৃষি ফার্ম লাগোয়া মাঠে প্রায় দু সপ্তাহ ধরে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন তাঁরা। জনা ৪৫ য়ের দলে শিশু ও মহিলা রয়েছে ২৪ জন মত। বুধবার দুপুরে আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি শুরু হয়নি। তবু সেই মেঘ মাথায় চলছিল রান্নাবান্না খোলা আকাশের নীচেই। ব্লক প্রশাসনের তা নজরে আসতেই তাদের সকলকেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল সাগরদিঘির কৃষি মান্ডিতে।

বিডিও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, খোলা আকাশের নীচে মাঠের মধ্যে ছিলেন তাঁরা। তা প্রশাসনের নজরে আসতেই মাঠ থেকে কিষান মান্ডিতে বুধবার দুপুরের পরই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁদের সকলকেই। ঝড়, বৃষ্টির পূর্বাভাস যত দিন রয়েছে তত দিন সেখানেই তাঁদের দু’বেলা খাবারও দেওয়া হবে।

এঁরা সবাই ঝাড়খণ্ড বা তার আশপাশ থেকে সাগরদিঘিতে এসেছেন। এইভাবেই সারা বছর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান তাঁরা।

এদের সকলেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামে। সারা বছর তারা এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় পরিবার নিয়ে। বিভিন্ন পাখি, পশু মেরে তাই কেটে রান্না করে খান তাঁরা। এটাই তাদের জীবিকা।

এদেরই একজন রবি কুর্মি বলছেন, ‘‘করোনা আর লকডাউনে পশু, পাখিরও যেন আকাল পড়েছে। তাই সেভাবে মারা যাচ্ছে না তাদের। ছেলে মেয়েরা ভিক্ষে করে। বড় মেয়েরা গাছ গাছালির ওষুধ বিক্রি করে কিছু আয় করে। খোলা আকাশের নীচে আমরা থাকি। ঝড় বৃষ্টি হলে তাঁবু টাঙিয়ে নিই।" কিন্তু বড় ঝড় এলে তাতে তাঁবু কী টিকবে? আশপাশের পাকা স্কুল ঘরে সরিয়ে নিতে কেউ আসেনি?

‘‘কই না তো। কেউ তো বলেনি মাঠ থেকে স্কুল ঘরে সরে যেতে।’’

সকালে বিকাশ ব্যাধ বলছেন, ‘‘ঝড় হবে শুনেছি। কিন্তু ঝড় বৃষ্টি এখনও আসেনি। কেউ যদি স্কুল ঘরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে যাব। কিন্তু আমরা নিজের থেকে গেলে স্কুল ঘর খুলে দেয় না গ্রামবাসীরা। ভাবে যদি স্কুল ঘর নোংরা করে ফেলি। তবে ঝড় বৃষ্টি এলে মাঠের আশপাশে বলতে রেল স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নেব।"
আরশোলা ব্যাধের কথা, ‘‘আমরা তো আছি প্রায় দু’সপ্তাহ। রোজই বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও তাঁবু টাঙাই, কখনও রেলের প্ল্যাটফর্মে গিয়ে আশ্রয় নিই। ঝড়, বৃষ্টির জন্য কেউ তো এখনও সরে যাওয়ার কথা বলে নি। তাই আছি।" তাদের সঙ্গে কথা বলার পরই বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। তারপরেই মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE